জাতীয় ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলার ধার্য তারিখে এবার ক্র্যাচে ভর দিয়ে আদালতে হাজির হলেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত তারিখ ছিল। এদিন এই মামলায় আরও দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ সময় আসামি মামুনুল হক ক্র্যাচে ভর দিয়ে আদালতে উপস্থিত হন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মামুনুল হককে পুনরায় কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। এ সময় মামুনুল হকের মুক্তির দাবি করে তার অনুসারীরা কোরআনের আয়াত পড়ে আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল ও শ্লোগান দেন।
তাদের মিছিল শ্লোগান শুরু হলে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় এবং কড়া সতর্কতা অবলম্বন করায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আগামী ৪ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ জানান, পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মামুনুল হককে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। আসামি মামুনুল হক এদিন ক্র্যাচে ভর দিয়ে আদালতে হাজিরা দেন। পরে মামলার কার্যক্রম শুরু হলে সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্টের পাবলিক রিলেশন অফিসার জাকির হোসেন ও স্থানীয় সাংবাদিক নূর নবী জনি আদালতে সাক্ষ্য দেন।
তিনি আরও জানান, এই মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত এগারো দফায় ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাক্ষীরা প্রত্যেকেই আদালতে বলেছেন মামুনুল হক ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালতের আইনজীবীরা জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য তারিখে মামুনুল হক ডান হাতে ক্র্যাচে ভর দিয়ে শান্তভাবে আদালতে হাজির হন। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে তার উপস্থিতিতেই দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের নিচতলায় নামার সঙ্গে সঙ্গে মামুনুল হককে তার অনুসারীরা ঘিরে ধরেন। কেউ কেউ মামুনুল হককে উদ্দেশ্য করে সালাম দেন। এ সময় মামুনুল হক তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সত্যের জয় হবে’। আর এই কথার সঙ্গে সঙ্গে তার অনুসারীরা কোরআনের আয়াত পড়ে শ্লোগান দেয়া শুরু করেন। শ্লোগানে শ্লোগানে তারা মামুনুল হকের মুক্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে মামুনুল হকের মুক্তি দাবি করে অনুসারীরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে মামুনুল হককে প্রিজন ভ্যানে তুলে আদালত থেকে বের করে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে নেয়া হলে তার অনুসারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।