জাতীয় ডেস্ক:
কোটি কোটি টাকা খরচ করেও মশা নিধনে ব্যর্থ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন। দিন দিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। নিয়মিত অভিযান, ফগিংসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পরও ফল হচ্ছে শূন্য।
চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা কাগজে কলমে পাওয়া গেলেও পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে মে মাসের শেষ দিকে। রাজধানীর ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে জুলাই মাসজুড়ে। প্রথম থেকে নগরের দুই কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে সুফল মিলছে না।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) ১২টি টিমের কাজ করার কথা থাকলেও মাঠে পাওয়া যায় দুইটি টিম। অভিযান পরিচালনাকারীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত সচেতনতার বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
ডিএসসিসির ফুড অ্যান্ড স্যানিটারি কর্মকর্তা এস এম মোশাররফ হোসেন মিলন বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এবার এডিসের লার্ভা বেশি হচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতি অতি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার কথাও জানান তিনি।
এদিকে ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন বলেন, আমাদের কাজ যেহেতু মাঠ পর্যায়ে তাই আমরা সেখানেই কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি, সবাই যদি সচেতন হন তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেডে সংকুলান না হওয়ায় ফ্লোরে রাখা হচ্ছে রোগী। হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন বাবার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আইসিইউর বাইরে বিলাপ করছেন মেয়ে মুন্নিসহ তার স্বজনরা। রাজধানী সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় সব হাসপাতালে চিত্র একই রকম।
এদিক বিশেষজ্ঞরা জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই নগর কর্তৃপক্ষকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। ডেঙ্গুর হটস্পট জোন চিহ্নিত করে ব্যাপকভাবে অভিযান পরিচালনার কথা বলছেন তারা।
কীটতত্ত্ববিদ ড. কবীরুল বাশার বলেন, আগামী দুই মাস ডেঙ্গুর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকবে। তাই যার যার অবস্থান থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিকে ডেঙ্গুর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ১০ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে ২২৫ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া একই সময়ে আরও ২,৩৬১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৮,৪৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৪,৮০৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩,৬৫৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
