হাফিজুর রহমান কালিগঞ্জ প্রতিনিধি :
১ কোটি এবং ২ লক্ষ টাকার পরস্পর বিরোধী কাবিননামা নিয়ে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। থানায় স্বামী সাজুর বিরুদ্ধে জাপানেত্রী চেয়ারম্যান সাফিয়ার মিথ্যা চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা দায়ের।
গত (২৫ মার্চ) আদালতের নির্দেশে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানায় কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৮। এছাড়াও গত ২/৪/২৩ ইং সাতক্ষীরার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাপানেত্রী চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীন বাদী হয়ে স্বামীর সাজেদুল হক সাজু সহ ৩জনকে আসামি করে ভুয়া জাল কাবিননামা দাবি করে আরও ১টি পৃথক মামলা দায়ের করেছে।
বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ ব্রো অফ ইনভেস্টিগেশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত ২৩ মার্চ সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামীর সাজেদুল হক সাজুর বিরুদ্ধে ১টি মামলা দায়ের করে। মামলা নং সিআর ১৮৫/ ২৩।
কালীগঞ্জ আদালত মামলাটি এফ আই আর হিসেবে গণ্য করার জন্য কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কে নির্দেশ দেন। বর্তমান জাপানেত্রী চেয়ারম্যান স্ত্রী সাফিয়ার কোটি টাকা আদায়ের জন্য একের পর এক স্বামী সাজুর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি সহ নিজের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া ধামাচাপা দিতে নিত্যনতুন নাটক, মামলা সাজিয়ে চলেছেন বলে স্বামী সাজেদুল হক সাজু সাংবাদিকদের জানান।
চেয়ারম্যান সাফিয়া তার প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে গত ৬/২/২০২০ ইং তারিখে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা কাবিনে আমার সঙ্গে বিবাহ করে। পরে সে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় পরকীয়া প্রেমিক কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকের সঙ্গে পরকীয়ায় ধরা পড়া মুচলেকা দেওয়ার পর হতে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে দেনমোহরের কোটি টাকা আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে চেয়ারম্যান সাফিয়ার দায়ের করা মামলার সূত্র থেকে জানা যায় বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে গত ৯/১১/২০২২ ইং তারিখে অপরিচিত একজন ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় তলায় ম্যারেজ রেজিস্টার রওশন আলম পরিচয় দিয়ে ১ কোটি টাকা দেনমোহরে বিবাহ পড়ান। পরে স্বামী হিসেবে প্রতারণা করে স্বাক্ষর যুক্ত বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়ারম্যানি প্যাড নিয়ে এটি দিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখাইয়ে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এরমধ্যে ছুরি দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা আদায় করে বলে মামলা সূত্রে জানা যায় এ বিষয়টি নিয়ে থানায় পরস্পর বিরোধী ২টি সাধারণ ডায়েরি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। থানায় গত ১৮/১২ /২২ ইং তারিখে জাপানেত্রী চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীনের দায়ের করা ৮৭০ নং সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায় চেয়ারম্যান সাফিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর হতে কারণে অকারণে স্বামী সাজু মোট অংকের টাকা চাইয়া বিভিন্ন নির্যাতন ও হুমকি প্রদর্শন করে আসছিল।
সাধারণ ডায়েরি র তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আব্দুর রহিম বিষয়টি তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি চাইলেও আজও তা মেলেনি। অপরদিকে স্বামী সাজদুল হক এর দায়ের করা কালিগঞ্জ থানায় গত ২৩/ ২ /২৩ তারিখে ১১০১ নং সাধারণ ডায়েরি সূত্রে থেকে জানা যায় চেয়ারম্যান সাফিয়াকে বিয়ের বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত চাপা রাখতে বলে।
আমি তার কথামতো নির্বাচনে যাবতীয় খরচ সহ সংসারের খরচ বহন করে আসিতেছি । আমি তার পিতার জমিতে তার প্রাপ্য অংশ ৪০ লক্ষ টাকার বাড়ি ব্যবসার জন্য ৮ লক্ষ টাকা, নির্বাচনী খরচ বাবদ ১৬ লক্ষ টাকা, প্রাইভেট গাড়ি খরিদ বাবদ ১৩ লক্ষ টাকা, ছাড়াও বিভিন্ন ঋণ পরিশোধ বাবদ আরও ১৩ লক্ষ টাকা মিলিয়ে প্রায় ৮০/৯০ লক্ষ টাকা তাকে দিয়েছি। আমার নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, ধনাট্য ব্যক্তি, চাকরিজীবী দের ফাঁদে ফেলে পরকীয়া ও টাকা আদায় করে আসছিল।
বিষয়টি আমি স্বামী হিসেবে বিশ্বাস না করলেও গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর কৃষি ব্যাংক শাখার সহকারি ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে রাতে বাসায় সামাজিক কার্যকলাপরত অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলি এবং সে যাত্রায় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রেজার নিকট অভিভাবক হিসেবে মুচলিকা দিয়ে মুক্তি পায়। পরে সে আমার নামে বিভিন্ন আদালত, থানায় মিথ্যা হয়রানি মূলক মামলা করে আসছে। তবে এ ব্যাপারে সততা জানার জন্য একাধিকবার চেয়ারম্যান সাফিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। বর্তমান চেয়ারম্যান সাফিয়ার কোটি টাকার কাবিন নিয়ে উপজেলা জুড়ে টক অফ দা টাউনে পরিণত হয়েছে।