বিনোদন ডেস্ক :
অভিনেত্রী সুবাহকে বিয়ে করে আবারো আলোচনায় এসেছেন গায়ক ইলিয়াস হোসেন। নিজের দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়েই নতুন করে বিয়ে করেন সুবাহকে। কিন্তু সে বিয়েও সুখকর হয়নি। উল্টো অভিযোগ এসেছে সুবাহ ইলিয়াসের তৃতীয় নয়, চতুর্থ স্ত্রী। কিন্তু কে এ ইলিয়াস তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
১৯৮৯ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন এ গায়ক। ২০১২ সালে প্রথম একক অ্যালবাম বের হয় তার; যার নাম ছিল ‘না বলা কথা’। প্রথম অ্যালবামেই বাজিমাত করেন ইলিয়াস। মন জয় করেন শ্রোতাদের। এরপর তিনি বের করেন ‘না বলা কথা-২’ নামে আরেকটি অ্যালবাম। এ ছাড়াও কাজ করেছেন ডুয়েট ও অসংখ্য মিক্সড অ্যালবামে।
৫০টির বেশি মিক্সড অ্যালবামে কাজ করেছেন ইলিয়াস হোসেন। এর বাইরে স্টেজ, টিভি লাইভ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন তিনি। পাশাপাশি ফ্যাশন মডেলিংয়েও জড়িত। বিলর্বোড, বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে পাওয়া যায় তাকে। এ ছাড়া স্থানীয় রাজনীতির সাথেও তার সম্পৃক্ততার কথা জানা গেছে। ইলিয়াস হোসেনের ছোট ভাই আল আমিন ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ জেলার বর্তমান সভাপতি।
একাধিক বিয়ে করে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন গায়ক ইলিয়াস। গত ১ ডিসেম্বর বিবাহবন্ধনে আবন্ধ হন ইলিয়াস ও সুবাহ। বিয়ের এক মাস না যেতেই সেই সংসারে ভাঙন সুর ওঠে। সেই দাম্পত্যের দ্বন্দ্ব এখন চরম পর্যায়ে। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় জিডিও করেছেন। সংবাদ সম্মেলন করেও আনা হয়েছে নানা অভিযোগ।
স্বামী ইলিয়াসের বিষয়ে একের পর এক বিস্ফোরক ঘটনা প্রকাশ্যে আনেন সুবাহ। গেল বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, প্রতিটা মেয়েই অনেক স্বপ্ন নিয়ে গায়ে হলুদ করে হাসিখুশি ভাবে বিয়ে করে। সংসার করার জন্য বাচ্চা জন্ম দিয়ে মা হওয়ার জন্য। আমার সাথে বিয়ের পরে ইলিয়াস আর কারিনের এমন কিছু রেকর্ড আমি শুনেছি যে রেকর্ডগুলো আমার কাছে আছে যেটা আপনারা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন। এসব শুনে আমার আসলেই ওর সাথে থাকা সম্ভব না, এর থেকে মরে যাওয়া ভালো।
তিনি আরও লেখেন, কিছু কিছু ছেলে আছে বিয়েটাকে খেলা হিসেবে নিয়ে মেয়েদের জীবন নষ্ট করে দেয়। সব মেয়ে হাসিমুখে গরিব স্বামীর সাথে সংসার করতে পারে। কম দামি কাপড় পরে লবণ দিয়ে ভাত খেয়েও অনেক মেয়ে সংসার করে কিন্তু যখন কোনো স্বামী বেঈমানি করে, অন্য মেয়ের কাছে বউয়ের নামে মিথ্যা কথা বলে সম্পর্ক রাখে, যার চরিত্রের ঠিক থাকে না তার সাথে এটলিস্ট সংসার হয় না, হবেও না।
অন্যদিকে ইলিয়াস বলেন, আমি কেন, দুনিয়ার কেউ ওর (সুবাহ) সঙ্গে সংসার করতে পারবে না। ওর সাথে বিয়ে না হওয়াতে নাসির অনেক ভাগ্যবান। অল্প কয়েকদিনে যা দেখলাম, তা বলার বাহিরে। আমার নামে যাতে বদনাম করতে না পারে, সেই জন্য বিয়ে করেছি। কেউ যাতে কোনো ধরনের বদনাম না দিতে পারে। আমি সুবাহকে ডির্ভোস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি কারিনের সঙ্গেই থাকতে চাই।
তিনি আরও বলেন, সুবাহ আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। ও (সুবাহ) ভালো করেই জানত, আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে দূরত্ব চলছিল। এ সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। যেটা আমি বুঝতে পারিনি। বিয়ে না করলে আমার মানসম্মান, ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে। সুবাহ বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্নভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছিল। মানসম্মানের কথা চিন্তা করে এতদিন চুপ ছিলাম। কয়েকদিন ধরে একের পর এক আপত্তিকার ঘটনা ঘটছে, যা আমার জন্য বিব্রতকর। পরে ভেবে দেখলাম, সত্যটা সবার জানা উচিত। আর তাই মুখ খুলতে বাধ্য হলাম।
দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স প্রসঙ্গে ইলিয়াস জানান, আমাদের ডির্ভোস হয়নি। ডির্ভোস দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করে সুবাহ। কারিন আমার স্ত্রী। মাঝে কারিনের সঙ্গে কয়েক মাস আমার যোগাযোগ ছিল না। আর সেই সুযোগটা সুবাহ নিয়েছে। বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছে। পরে আমি কাগজ পাঠিয়েছি। তবে কারিনকে সাইন করতে না করে দিই। কারিনের সঙ্গে ডির্ভোস হওয়ার এক বছর পর বিয়ের কথা জানাবে বলেছিল সুবাহ। কিন্তু বিয়ের দশ দিনের মাথায় ছবি প্রকাশ করে। আমার আড়ালে ছবি তুলেছে। আমার ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও দিয়ে সুবাহ আমাকে প্রতিনিয়ত ব্ল্যাকমেইল করেছে। বিয়ে না করলে এগুলো নেটে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। সেই ভয় থেকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিশাতকে বিয়ে করেছিলেন ইলিয়াস। সে সময় নিশাত মেডিকেল সায়েন্সের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিশাতের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কারিন নাজকে বিয়ে করেন এই গায়ক। কারিন সুইডেনের স্টোকহোমে থাকেন। তৃতীয় স্ত্রী সুবাহর সঙ্গে রাজধানীর বনানীতে সংসার পেতেছিলেন ইলিয়াস। সেটিও প্রায় ভাঙ্গনের পথে।