হোম খুলনাযশোর কেশবপুরে বিসিক শিল্পনগরী না থাকায় আজও গড়ে ওঠেনি শিল্প প্রতিষ্ঠান

কেশবপুরে বিসিক শিল্পনগরী না থাকায় আজও গড়ে ওঠেনি শিল্প প্রতিষ্ঠান

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 11 ভিউজ
জয়দেব চক্রবর্তী:
কেশবপুরে বিসিক শিল্পনগরী না থাকায় উল্লেখযোগ্য কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, খামখেয়ালীপণা ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপণার কারণে দীর্ঘ ৪০ বছরেও হয়নি প্রস্তাবিত বিসিক শিল্পনগরী। অনুকুল পরিবেশ, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা সত্তে¡ও এ সংক্রান্ত ফাইল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের লাল ফিতায় আটকে রয়েছে। শিল্পনগরী গড়ে না ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেশবপুরের বিভিন্ন শ্রণী পেশার মানুষ।
যশোর জেলার অন্যতম শিল্পস্থান বলে খ্যাত কেশবপুর। এখানে ক্ষুদ্র শিল্প থেকে শুরু করে বড় বড় অনেক শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু এককভাবে ও অনেক ক্ষেত্রে মূলধনের অভাবে এসব শিল্প গড়ে উঠতে অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৫ সালে বিসিক শিল্পনগরী গড়ার উদ্যোগ নিলে ব্যবসায়ী মহলে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দেয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নিস্ক্রিয়তা তাদেরকে হতাশ করেছে। এখানে বাঁশ, কাঠ, ঢেঁকি, কামার-কুমার, হস্তচালিত তাঁত, খরগোশ প্রজনন কেন্দ্র, পোল্ট্রি, ডেইরি, ডাক ফার্ম, হোমিওপ্যাথিক শিশি, কর্ক, বোতাম, রঙ, তুলি, ব্রাশ কারখানা, বাঁশ ও বেতের ডেকোরেটিং, ঘানিসহ বহুমুখী শিল্প স্থাপণের আগ্রহ থাকা সত্তে¡ও মাঝারী, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা কেবলমাত্র পুঁজির অভাবে এসব শিল্প বহুমুখী করতে পারছেন না। অথচ স্বল্প পুঁজি বিনিযোগে এসব শিল্পের সম্প্রসারণ সম্ভব। যার মাধ্যমে হাজার হাজার বেকারের কর্মসংস্থান হতে পারে। এরমধ্যে উপজেলার আলতোপোল গ্রামে বিআরডিবি‘র উদ্যোগে সামাজিক জীবীকায়ন পল্লী স্থপণ করা হয়েছে। যেখানে শত শত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪-৮৫ অর্থ বছরে সরকারি উদ্যোগে কেশবপুরকে শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। জেলা বিসিকের তত্ত¡াবধানে সেসময় প্রতিজনের কাছ থেকে এক হাজার টাকা হারে তিন শতাধিক সদস্য সংগৃহীত হয়েছিল। এখানে শিল্পনগরীর জন্য স্থান নির্বাচনও হয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেস্থান খরিদ না করায় প্রস্তাবিত শিল্পনগরীর প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। প্রশাসনিক অর্ন্তদ্ব›েদ্বর কারণে কেশবপুরে শিল্পনগরীর কাজ আজও স্তিমিত। ফলে সংগৃহীত সদস্যরাও হতাশ হয়ে পড়েছেন। এপর্যন্ত কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। বরং সদস্যরাই সদস্য ফি’র টাকা ফেরতের জন্য যশোরস্থ বিসিক কার্যালয়ে বারংবার ধরনা দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। আশ্চার্য হলেও সত্য যে, দীর্ঘ ৪০ বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তা সম্ভাবনাময় এশিল্পকে গতিশীল করার জন্যে আর কোন আগ্রহ দেখায়নি। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যর্থতা সকলকে হতাশ করেছে।কেশবপুর শহরের ব্যবসায়ী হাজী রুহূল কুদ্দুস বলেন, এই অঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প গড়ে উঠলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় শিল্পের জন্যে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি ও উৎপন্ন পণ্য রপ্তানির সকল সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান থাকায় আঞ্চলিক উন্নয়নে ব্যাপক সহায়তা রাখবে। অবিলম্বে জায়গা নির্ধারণ করে বিসিক শিল্পনগরী স্থপণের দাবি তার।যশোর বিসিকের ভারপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক ফরিদা ইয়াসমিন জানান, যশোর জেলার কয়েকটি স্থানে শিল্পনগরী গড়ে তোলার প্রস্তাবনা রয়েছে। এরমধ্যে রামনগর শিল্প নগরীর কাজ এখন চলমান। যশোর-নড়াইল সড়কের হামিদপুরের শিল্পনগরীর প্রস্তাবনা বাতিল করা হয়েছে। তবে কেশবপুর শিল্প নগরী গড়ে তোলার প্রস্তাবনা অনেক আগের। কিন্তু প্রকল্পটি কি অবস্থায় রয়েছে তা কাগজপত্র না দেখে বলা যাবে না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন