জয়দেব চক্রবর্তী, কেশবপুর (যশোর):
যশোরের কেশবপুরের মাতৃ-মঙ্গল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও দক্ষ জনশক্তি না নিয়েই চলছে কার্যক্রম।শীর্ষক সংবাদ ১৬ জুলাই দৈনিক লোকসমাজ সহ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশের পর ভুয়া ডাক্তার কিøনিক মালিক জাহিদ হাসান দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলনে, কাউকে রক্ষা করা আমার দায়িত্ব না। নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠান চালাতে হবে।
তিনি সোমবার দেশব্যাপী ডাক্তারদের মানব বন্ধন কর্মসূচির পর উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন , সকল ক্লিনিক মালিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। রোববার যশোরের সিভিল সার্জন পরিদর্শন-কালে যে সকল অসংগতি দেখেছেন সেগুলি অফিসে ডেকে বলা হয়েছে। যে কোন মুহূর্তে র্যাব, উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করতে পারেন। মাতৃ-মঙ্গল ক্লিনিক বিষয়ে তিনি বলেন, সংশোধন না হলে সেও আইনের আওতায় আসবে। যে পর্যন্ত ঘটেছে তার কোন প্রতিকার বিষয়ে তিনি মুখ খুলেন নি।
গত ডিসেম্বর মাসে ক্লিনিকের ডাক্তার কানিজ ফাতিমা ক্লিনিক থেকে চলে গেলেও তার নামে এখনো চলছে আলট্রাসোনো রিপোর্ট। যা নিয়ে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। রিপোর্টটিতে দেখা যায় গত ২০/০৬/২৩ তারিখে ডাক্তার কানিজ ফাতিমা স্বাক্ষর দিয়েছেন। অথচ তিনি গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে দায়িত্ব ছেড়ে অন্য ক্লিনিকে চলে গেছেন।
ডাক্তার কানিজ ফাতিমা বলেন, ওই ক্লিনিক থেকে আমার সিল স্বাক্ষর দিয়ে যে আলট্রাসোনো রিপোর্ট দেয়া হয়েছে এটা আমার নয়। আমি ডিসেম্বর মাস থেকে ওখানে চিকিৎসা দেই না। এ বিষয়ে তিনি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ক্লিনিকটির মালিক জাহিদ হাসান নিজে অপারেশন বাদে সকল চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন। অথচ তিনি কোন ডাক্তার নন, তিনিই এ ক্লিনিকটির মালিক। গ্রামের সহজ সরল মানুষ তাকে ডাক্তার ভেবে চিকিৎসাপত্র নিচ্ছে। অপরদিকে সাইনবোর্ড বা ক্লিনিকটির বিলবোর্ডে যে সকল ডাক্তারদের নাম লেখা রয়েছে তারা কেউ এখানে রোগী দেখেন না। সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে ডাক্তার ফয়সাল বর্তমানে সেখানে কর্মরত নন। তিনি চলতি মাস থেকে অন্য একটি ক্লিনিকে চলে গেছেন। বর্তমানে এখানে সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার নাই, ডিপ্লোমা নার্স নাই, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নাই। সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক ভাবে এ ক্লিনিকটি চলছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্লিনিকটিকে সরেজমিন গেলে দেখা যায় তিনি চেম্বারে বসে আসেন। প্রবেশ করার সাথে সাথে তিনি রোগী সরিয়ে দিয়ে কথা বলতে থাকেন। তিনি ডাক্তার কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন না ,আমি এখানে বসে ম্যানেজমেন্ট চালাই। অথচ তার টেবিলে পেশার মাপা ও ষ্টেথেসকোপ রয়েছে।
ক্লিনিক মালিক জাহিদুল ইসলাম , বলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন ডাক্তার সেখানে রোগী দেখেন এমনকি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাঝেমধ্যে বসেন এবং দেখা শোনা করেন। কোন আবাসিক ডাক্তার আছে কিনা বললে বলেন, এখন নেই। সব মিলিয়ে হযবরল অবস্থায় চলছে ক্লিনিকটি, যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন,সময় স্বল্পতায় চলে আসছি আগামী দিনে দেখব। অবশ্যই কোন অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না।