পরেশ দেবনাথ, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বসুন্তিয়া, পাঁচপোতা, আলতাপোল, পাঁচারইসহ বিভিন্ন গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের গাছতলা পূজা ধর্মীয় গাছতলায় মঙ্গলবার (১৯ মার্চ-২৪) সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে অনেক রাত পর্যন্ত অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী বসুন্তিয়া গাছতলা পূজার্চনায় পূরোহীতের দ্বায়িত্বে নিয়োজিত মিহির চক্রবর্তী বলেন, এই পূজায় হরি, কালী, শীতলা, মা-মনষা, ও মা-মঙ্গলা এই পাঁচ দেবির পূজা করা হয়। সার্বিক মঙ্গল কামনায় এই পূজা করা হয়।
বসুন্তিয়া পূজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাস্টার সুজিত কুমার সরকার জানান, এখানে বিভিন্ন গ্রামের নারী-পুরুষসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের শত শত লোক এই পূজা দেখতে আসেন। আনুমানিক ৮০ বছরের উর্দ্ধে এখানে জাঁকজমকপূর্ণভাবে এই পূজা হয়ে আসছে। প্রতিবারের মত এই পূজায় মানসিক হিসাবে ভক্তদের ২জন ওজন করে মিষ্টান্ন-ভোগ ও টাকা পূজায় নিবেদন করেছেন।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব দাস বলেন, বসুন্তিয়া গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক মঙ্গলকোট ইউনিয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রয়াত বীরেন্দ্রনাথ মল্লিকের সহধর্মিণী প্রয়াত শোভা রাণী মল্লিকের স্মরণে এই মন্দিরটি সংস্কার করায় ভক্তদের আগমন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পূজার্চনার সাথে সাথে হরিনাম সংকীর্তন অনু্ষ্ঠিত হয়। পূজানুষ্ঠানে এলাকা ইউপি মেম্বর কামরুল ইসলাম উপস্থিত সকলের সাথে মত বিনিময় করেন।
গাছতলায় পূজাকালীন সময় এক মহিলা ভক্তের মায়ের ভর হয়েছিল। তিনি পূজার কিছু ত্রুটি সম্পর্কে বলেন, “তোরা পূজায় হোম করিস না, হোম করতে হবে।” তার কথানুযায়ী পূজা শেষে হোম করা হয়।
গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তি সুভাষ রায় (৭৫) জানান, প্রথম আমলে এখানে পাঠা বলি হতো, এখন সেবদলে মিষ্টান্ন দেওয়া হয়। হিন্দু-মুসলমান অনেক লোক মানদ করে সুফল পেয়েছেন। জাঁকযমকপূর্ণভাবে এখানে অনুষ্ঠান হয়ে আসছে।
সাধারণ সম্পাদক মাস্টার প্রদীপ দেবনাথ জানান, ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ায় এবার দুই জন ভক্তের পক্ষ থেকে মিষ্টান্ন, ফল নিবেদন করেছেন।
কোষাধ্যক্ষ উত্তম রায় বলেন, এই গাছতলা পূজার ঐতিহ্যের কারণে আগের চেয়ে ভক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক ভক্ত এখানে মানদ করে মুক্তি পেয়েছেন। অসুস্থ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়ায় পারুলিয়া, সাতক্ষীরার অনামিকা পাল ও বসুন্তিয়া গ্রামের মিথিলা দাসের অভিভাবক তাদের সন্তানকে ওজন করে মন্দিরে মিষ্টি, ফলফুলরী দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর একজন ভক্ত তিনি যা মানষা করেছেন তা থেকে মুক্তি পেলে আগামী বছর এই পূজার সমস্ত খরচ বহন করবেন। এই মন্দিরে, বিপদ-আপদ, রোগ-ব্যাধি ইত্যাদি মানদ করে মুক্তি পাওয়ায় প্রতি বছর ভক্তরা দান করেন। এ উপলক্ষে এখানে বাজার বসে।