হোম জাতীয় কেমিকেল ও দাহ্য পণ্য নিয়ে চরম অগ্নিঝুঁকিতে চট্টগ্রাম বন্দর

কেমিকেল ও দাহ্য পণ্য নিয়ে চরম অগ্নিঝুঁকিতে চট্টগ্রাম বন্দর

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 40 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

তীব্র তাপপ্রবাহে ১ হাজার ৫০০ লটের বেশি কেমিকেল ও দাহ্য পণ্য নিয়ে চরম অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। কয়েক বছর ধরে পড়ে থাকা পরিবেশ দূষণকারী এইসব দাহ্য পণ্য নানা জটিলতায় নিলাম করা যায়নি। তাই শেড থেকে দ্রুত বের করে নিতে কাস্টমসকে জরুরি চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দরের পি শেডে আমদানি করা অন্যান্য কেমিকেল পণ্যের পাশেই গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে আছে প্রায় ১০০ ড্রাম কেমিকেল। এসব টেক্সটাইল কেমিকেল আমদানিকারক ছাড় না করায় নিলামে বিক্রির জন্য কাস্টমসের কাছে বাই পেপার হস্তান্তর করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু জটিলতার মুখে নিলামে বিক্রি না হওয়ায় এই ড্রামগুলো পড়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। চট্টগ্রাম বন্দরের দুটি কন্টেইনার ইয়ার্ড এবং ১২টি শেডে দীর্ঘদিন ধরে ১ হাজার ৫৬৬টি লট কেমিকেল ও দাহ্য পণ্য পড়ে থাকার তথ্য নিশ্চিত করেছেন বন্দর কর্মকর্তারা। এসব কেমিকেল এবং দাহ্য পণ্য বন্দরসহ আশপাশের এলাকার জন্য নিরাপত্তার পাশাপাশি অগ্নিঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, যে ক্যামিকেল এবং দাহ্য পদার্থগুলো সেখানে রয়েছে, তা বন্দরের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলো দ্রুততার সঙ্গে নিলামে বিক্রি কিংবা প্রয়োজন সাপেক্ষে ব্যবহার করতে দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তা না হলে যে কোনো দুর্ঘটনায় বিশ্ববাজারে এই আন্তর্জাতিক বন্দরের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে।

এদিকে, শেড এবং ইয়ার্ডে পড়ে থাকা কেমিকেল দ্রুত নিলামে বিক্রি কিংবা ধ্বংস করতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজকে জরুরি চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, যেসব ঝুঁকিপূর্ণ কেমিকেল সেখানে রয়েছে, সেগুলো দ্রুত অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এবছর এমনিতেই তীব্র গরমের কারণে অগ্নিঝুঁকি আরও বেড়েছে।

এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্নিঝুঁকি এড়াতে আগেই প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ ফায়ার সার্ভিসের। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, বন্দরকে ঝুঁকিমুক্ত করতে সেখানে আগে ফায়ার সেফটি প্ল্যান করতে হবে। সেইসঙ্গে অগ্নিনির্বাপনের সামগ্রী এবং ব্যবস্থা আগে থেকেই নেয়া হলে, যে কোনো দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

তবে বিপজ্জনক এসব পণ্য নিয়ে কিছুটা বিপাকে রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। অধিকাংশ পণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় যেমন নিলামে বিক্রি সম্ভব নয়। তেমনি বিপজ্জনক পণ্য হওয়ায় স্বাভাবিক নিয়মেও ধ্বংস করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ কমিশনার মো. সেলিম রেজা বলেন, এই ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য পদার্থ ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা কাস্টমসের নেই। তাই এনবিআরের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারি সার্ভিসেসকে (এমইএস) চিঠি দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় এই চিঠিটি এরইমধ্যে সেই দফতরে পাঠিয়েছে। তাই খুব দ্রুতই এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশা করছেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি এবং রফতানি পণ্য থেকে বছরে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। গত ৪ বছরে দুবার অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ২০২০ এবং ২০২২ সালের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই প্রত্যাশায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন