হোম এক্সক্লুসিভ কুড়িগ্রামে বন্যা, পানিবন্দি ১২ হাজার পরিবার

জাতীয় ডেস্ক:

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদী পানি কমতে শুরু করলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ৯ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার পরিবার। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচুস্থানে অবস্থান করলেও পড়েছেন শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার পূর্ব বালাডোবা, কালির আলগা, মুসারচর ও সদরের পোড়ার চরসহ ১০টি চরে বসবাসকারী দুই শতাধিক পরিবার ঘর বাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি তলিয়ে থাকায় ঠিক মতো রান্না করতে পারছেন না তারা। পাশাপাশি তাদের হাতে কোনো কাজ না থাকায় শুকনো খাবার এবং নলকূপ তলিয়ে থাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন তারা।

এদিকে নদ-নদীর অববাহিকার গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলার প্রায় ১০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। চারণভূমি তলিয়ে থাকায় চরাঞ্চলগুলো গবাদিপশুর খাদ্য নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের শুক্রবার দুপুর ১২টায় দেয়া তথ্য মতে, জেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম সদরের ধরলার সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৮৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব বালাডোবার চরের আব্দুর রহমান জানান, চরটি নতুন এবং নিচু হওয়ায় এখানকার বেশির ভাগ ঘর বাড়িতে কোমর সমান পানি উঠেছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গা ও নৌকায় বসবাস করছেন। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় ঠিকমত পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিকমত রান্না করতে না পারায় অনেককে একবেলা খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে।

সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ার মমিন বলেন, ‘পানি হ্রাস পেলেও এখনো বাড়ির চারিদিকে পানি। আবার পানি বৃদ্ধি পায় কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি। পটলসহ সব সবজি ক্ষেত পানি নিচে। এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম।’

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যদি আর বৃষ্টি না হয় তবে খুব দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নগদ অর্থ ও শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। যেখানে যখন প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন