কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মানুষের সাথে জহুরুল ইসলাম নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ ডিসেম্বর দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পাঠানো এক অভিযোগপত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, জহুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে জনবল নিয়োগ দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তিনি ইতিমধ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পূর্বে ৩/৪ বিঘা জমি ছিল। কিন্তু প্রতারণা করে এখন প্রায় নিজ গ্রামে ১২ বিঘা জমির মালিক। এছাড়াও তিনি ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন। কালীগঞ্জ শহরে কিনেছেন বেশ কয়েক শতক জমি। এই প্রতারক জহুরুল ইসলাম পেশায় একজন বিদ্যুৎ মিস্ত্রি। কিন্তু সেনাবাহিনী ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জনবল নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় এখন আর বিদ্যুতের কাজ করেন না।
বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় এখন তিনি দান করেন। হঠাৎ আঙুল ফুঁলে কলাগাছ হওয়ার মতো ব্যাপার। সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার স্বীকার কেউ টাকা চাইতে গেলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। জটারপাড়াসহ আশেপাশের প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে তিনি এ প্রতরণামূলক কাজ করে আসছেন। এভাবে প্রতারণা করে তিনি প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল কিনেছেন। এ পর্যন্ত তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার ভাতঘরা গ্রামের বাবর আলীর ছেলে আবু জাফর, সিদ্দিক আহমেদের ছেলে মজনু আহমেদ, একতারপুর গ্রামের রাজিবুল মিস্ত্রির ছেলে রকি আহমেদ ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছেন। তারা বৈধভাবে চাকরি পেলেও তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক জহুরুল।
বর্তমানে উপজেলার জটারপাড়া গ্রামের মতলেব হোসেনের ছেলে শাকিল আহমেদ, টিপু সুলতান চৌধুরির ছেলে মাসুম চৌধুরি, মতিয়ার রহমানের ছেলে সজিব আহমেদের বৈধভাবে সেনাবাহিনীতে চাকরি হয়। জমি-জমা বিক্রি করে প্রত্যেকে প্রতারক জহুরুল ইসলামকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। জটারপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিংকু হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিয়েও এখনো চাকরি দিতে পারেনি। তাকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন মাঠে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। এছাড়াও মতিয়ার রহমানের ছেলে সুমন বিশ^াসের কাছ থেকেও টাকা নিয়ে তাকে ঘুরাচ্ছে। চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ায় জটারপাড়া গ্রামের রওশন চৌধুরির ছেলে রাজীব হোসেনের সাথেও প্রতারণা করেন জহুরুল ইসলাম। এ নিয়ে গ্রামে বিচার-শালিসও করা হয়। এখনো জহুরুলের কাছে ২ লক্ষ টাকা পাবে রাজীব হোসেন। এসব টাকা হাতিয়ে নিয়ে তিনি প্রভাবশালী একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন। সেই গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে সে এলাকায় চাঁদাবাজিও করে বেড়ায়।
জটারপাড়া গ্রামের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আগে বিদ্যুতের মিস্ত্রি জহুরলের কিছু ছিল না। গত ২/৩ বছরে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। অনেক জায়গা জমি কিনেছে।
এ সব ব্যাপারে জহুরুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
s