হোম আন্তর্জাতিক কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির জন্য ড. ইউনূসকে সিপিজের আহ্বান

কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তির জন্য ড. ইউনূসকে সিপিজের আহ্বান

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 48 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বাংলাদেশে কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তি ও কাজে ফেরার সুযোগ দেওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে দেশটির প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম সুরক্ষা সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে ড. ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থাটি এই আহ্বান জানায়।

চিঠিতে হত্যা মামলায় আটক চার সাংবাদিকের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সিপিজে দাবি করেছে।

আটক ব্যক্তিরা সংবাদ প্রকাশ ও রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার শিকার দাবি করে চিঠিতে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে “বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের ঘাটতি” রয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের পরিবারের বর্ণনা থেকে কাশিমপুর কারাগারের যে পরিবেশ সম্পর্কে জানা গেছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তাদের রাখা হয়েছে ৩৬ বর্গফুটের ছোট একটা কক্ষে, যেখানে দরজার পরিবর্তে রয়েছে লোহার শিক। ফলে ঠান্ডা আবহাওয়া ও মশাবাহিত রোগে তারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। তাদের ঘুমাতে হয় কোনও গদি ছাড়া কংক্রিটের মেঝেতে। আর যা খেতে দেওয়া হয়, তা তো পরিমাণে অপ্রতুল এবং প্রায়ই অখাদ্য।

বন্দিদের স্বাস্থ্যের উদ্বেগ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো গুরুতর অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মাসের পর মাস আটক রয়েছেন। অথচ কারাগারে কোনও নিয়মিত ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। পরিবার না পাঠালে তারা প্রয়োজনীয় ওষুধও পান না।

চিঠিতে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে দ্য ডেইলি স্টার-এ দেওয়া ড. ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করা হয়, যেখানে তিনি দাবি করেন, পূর্ববর্তী সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে “তড়িঘড়ি” হত্যা মামলা দিয়েছে। অথচ তার সরকার এসব বন্ধ করে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে।

সিপিজে বলেছে, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চার সাংবাদিক—ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত—সবার বিরুদ্ধেই হত্যা মামলা হয়েছে এবং বারবার তাদের জামিন নাকচ করা হয়েছে। এমনকি তাদের আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকেও একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সিপিজে জোর দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, দেশটি আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদের (আইসিসিপিআর) সদস্য, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেওয়া কথা বলা হয়।

মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে সব কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে সিপিজে বলেছে, বাস্তবসম্মত সংস্কারের জন্য অতীতের ধারার সঙ্গে সুস্পষ্ট পার্থক্য জরুরি। চিঠিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান করা হয়।

চলতি বছর মালয়েশিয়ায় আয়োজিত গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্সে শতাধিক দেশের দেড় হাজারেরও বেশি সাংবাদিক তাদের এই আহ্বানে সংহতি জানিয়েছেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন