অনলাইন ডেস্ক:
গাজীপুরের শ্রীপুরে জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড পোশাক কারখানার আটতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিক জাকির হোসেনের (২৪) মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে শ্রমিকরা ওই কারখানা ঘেরাও করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশের সাঁজোয়াযান এবং কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এতে বাধা দেওয়ায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
জাকির হোসেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মোক্তার উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুরের নয়নপুর (নতুন বাজার) এলাকার জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় ছাদ থেকে পড়ে আহত হলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, জাকির হোসেন কারখানা থেকে ছুটি চেয়েছিল। পরে ছুটি দেওয়া যাবে না বলে এক কর্মকর্তা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তবে কোন কর্মকর্তার কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন তা জানাতে পারেননি তারা। পরে তিনি কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। গতকাল রাত থেকে কারখানায় পুলিশ অবস্থান করছিলেন। সকালে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ঘেরাও করে কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। উত্তেজিত শ্রমিকেরা প্রতিরোধের মুখে পুলিশের একটি এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) গাড়িতে ভাঙচুর চালান।
শ্রমিকেরা আরও দাবি করেন, পুলিশ শান্তিপূর্ণ শ্রমিকদের তাদের ওপর হঠাৎ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে তাদের ১৫-২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড পোশাক কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) জুবায়ের এম বাশার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে জাকির কয়েকদিন যাবৎ হতাশায় ছিলেন। ওই শ্রমিক পারিবারিক হতাশাগ্রস্ত থেকে আটতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছুটি চাওয়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি।’
গাজীপুর শিল্পপুলিশের পরিদর্শক (শ্রীপুর জোন) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে তাদের ৯ জন পুলিশ সদস্য ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে সেনাসদস্য, শিল্পপুলিশ, থানার পুলিশ উপস্থিত আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’