হোম আন্তর্জাতিক কাবুল বিমানবন্দরে তালেবানের লাঠিপেটা, ফাঁকা গুলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

কাবুল বিমানবন্দরে লোকজনকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করাতে গিয়ে আকাশে ফাঁকা গুলি করেছে তালেবান যোদ্ধারা। এ সময়ে তারা লাঠিপেটাও করেছে। এছাড়া বিমানবন্দরের বাইরে হুড়োহুড়িতে অন্তত সাত বেসামরিক আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত সাত দিনে আফগান বিমানবন্দরে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে এক ন্যাটো কর্মকর্তা দাবি করেছেন।

নিহতদের কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বাকিরা পদদলিত হয়ে মারা গেছেন। রোববার (২২ আগস্ট) ভিড় সরিয়ে দিতে বন্দুকধারীরা মারধর করলেও কেউ বড় ধরনের হতাহত হয়নি।

বিশৃঙ্খল কাবুল বিমানবন্দরে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে আফগানিস্তানের তালেবান যোদ্ধারা। বিমানবন্দরের প্রধান ফটকের বাইরে লোকজন যাতে সুশৃঙ্খলভাবে সারিবদ্ধ হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের সীমানার বাইরে লোকজনকে জড়ো হওয়ার অনুমোদন দিচ্ছে না তালেবান।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে। রোববার (২২ আগস্ট) ভোরেও সেখানে মানুষের দীর্ঘ সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
শনিবার রাতে কাবুলের চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে অস্ট্রেলিয়া। এতে অস্ট্রেলীয়, আফগান ভিসাধারী, নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী, মার্কিন ও ব্রিটিশ নাগরিকসহ ৪০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এমন খবর দিয়েছেন।

নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে এদিন কাবুল বিমানবন্দরে যেতে নাগরিকদের নিষেধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। যদিও আফগান ছাড়তে হাজার হাজার মানুষকে বিমানবন্দরটিতে জড়ো হতে দেখা গেছে।

গেল রোববার থেকে এখন পর্যন্ত একক রানওয়ের বিমানবন্দরটিতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গুলিতে, বাকিরা পদদলিত হয়ে নিহত হয়েছেন। সপ্তাহখানেক ধরে তীব্র গরম ও ধুলাবালির মধ্যে সেখানে পলায়নরত মানুষের ভিড় বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য যেসব দেশ বহু আফগান নাগরিকসহ, কূটনৈতিক ও বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার যে চেষ্টা করছে, অতিরিক্ত ভিড় ও চাপাচাপিতে তাদের অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।

বাবা-মা ও শিশুরা কংক্রিটের দেয়াল ঠেলে ফ্লাইটে ওঠার চেষ্টা করছেন। শনিবার কাবুলে একটি চার্টার ফ্লাইট স্থগিত করে দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। মার্কিন সামরিক বাহিনীর মেজর জেনারেল উইলিয়াম টেইলর বলেন, এখনো পাঁচ হাজার ৮০০ সেনা বিমানবন্দরে রয়েছে। স্থাপনাটি এখনো নিরাপদ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তবে বিমানবন্দরের ফটক অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার পর আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। এক তালেবান কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আমরা পরিস্থিতির উন্নতি চাচ্ছি। যারা দেশ ছাড়তে চাচ্ছেন, তারা যাতে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারেন, সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গত সপ্তাহে ১৭ হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যাদের মধ্যে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। কাবুল থেকে সরিয়ে নেওয়া তিন হাজার ৮০০ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

আমেরিকান নাগরিক ও শরণার্থীদের সরিয়ে আনা নিয়ে রোববার প্রেস ব্রিফিং করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আফগানিস্তানের পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে গোয়েন্দা, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা হালনাগাদ শোনার পর তিনি কথা বলবেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন