মিলন হোসেন ,বেনাপোল:
করোনা মহামরির এই সময়ে বেনাপোল পৌরসভা তথা গোটা বেনাপোল ইউনিয়ন ভুক্ত সকল গ্রাম এমনকি শার্শা উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়ন গ্রাম এর সাধারন নাগরিক ও জনসাধারন সুচিকিৎসা থেকে বলা চলে একরকম পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছে। এই মহামারীর সময়ে এই অঞ্চলে কোন সরকারী হাসপাতাল যেমন নেই তেমনি সরকারী ভাবে এই অঞ্চলে কোভিড-১৯ করোনার লক্ষন পরীক্ষার কোনই ব্যবস্থা নেই। এই চরম দুঃসময়ে এই অঞ্চলে করোনা সহ অন্যান্য নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্তদের একমাত্র ভারসা পল্লি চিকিৎসকবৃন্দ। যখন দেখা গেছে বড় বড় নামকরা ক্লিনিক হাসপাতাল এর বড়সড় নামজাদা ডাক্তারগন করোনার ভয়ে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন তখন পাড়া প্রতিবেশী, গ্রামবাসী, এলাকাবাসীদের ছেড়ে এই পল্লী চিকিৎসকরা কোথাও পালিয়ে যায়নি। বরং তারাই জীবনের ঝুকি নিয়ে করোনার প্রথমদিকের চরম পর্যায়ে রোগীদের পাশে থেকেছেন;এখনো আছেন।
বেনাপোল পৌর এলাকা তথা বেনাপোল ইউনিয়নভুক্ত গ্রামগুলোতে পল্লী চিকিৎসকবৃন্দ তাদের সেবা মুলক কর্মকান্ডকে আরও বেশী গতিশীল করার জন্য তাদের একমাত্র সংগঠন ” বেনাপোল ডাক্তার এ্যাসোসিয়েশন” এর মাধ্যোমে আরও সক্রিয় হচ্ছেন। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি মরহুম ডাক্তার ইউসুফ আলম এর সময়ে যথেষ্ট গতিশীল ছিল। এমনকি মরহুম ডাক্তার আমজাদ হোসেন এর সময় ও বেশ গতিশীল ছিল। দুর্ভাগ্যজনক হলো বেনাপোলের এই জনপ্রিয় চিকিৎসক আমজাদ ডাক্তার করোনা মহামারীর সময় বিনা চিকিৎসায় ঢাকায় যেয়ে মৃত্যু বরন করেন।
বেনাপোল ডাক্তার এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডাক্তার আব্বাস আলী ও সাধারন সম্পাদক ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক । সংগঠনের অধীনে বর্তমানে প্রায় ৮০ জনের মত চিকিৎসক জনসাধারনের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।বেনাপোলের ডাক্তার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে একজন দরিদ্র চিকিৎসক হিসাবে অনেক রোগীকে বিনা মুল্যে চিকিৎসা দিয়েছি। নিজের পকেট থেকে ৩০ হাজার টাকার মুল্যের ঔষধ রোগিদের বিনা মুল্যে দিয়েছি। আরো ২০ হাজার টাকা অনুদান যোগাড় করে তাও দরিদ্রদের জন্যে ঔষুধ সংগ্রহ করে বিতরন করে দিয়েছি।
ঘিবা গ্রামের ডাক্তার জামাল হোসেন বলেন, করোনার শুরু থেকেই আমি এলাকার দরিদ্র রোগীদের শুধু করোনা নয় সকল ধরনের রোগের বিনা মুল্যে চিকিৎসা দিয়ে আসছি।
করোনার মহামারীর এই দুর্যোগময় সময়ে পরিস্থিতী প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীন সাংবাদিক কবি আলতাফ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এক শ্রেনীর উচ্চ বর্নের ব্যবসায়ী চিকিৎসক আমাদের পল্লী চিকিৎসকদের ব্যাঙ্গ করে হাতুড়ে ডাক্তার বলেন। এমনকি রোগীদের কেউ কেউ এরকম বিরুপ মন্তব্য করেন। যা দুর্ভাগ্যজনক। আজ প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের ভঙ্গুর চিকিৎসা তথা স্বাস্থ্য ব্যবস্তার মধ্যে সাধারন জনগন তথা দরিদ্র মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা পল্লী চিকিৎসকবৃন্দ। তাই আমি দাবি করছি আমাদের দেশে বিশেষ করে এই বেনাপোল অঞ্চলে যাতে আরো বেশী দক্ষ পল্লী চিকিৎসক সৃষ্টি করা যায় তার জন্যে অত্র এলাকায় প্রশিক্ষন এর ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্যে আমি অত্র এলাকায় পল্লী চিকিৎসকদের জন্যে একটি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবি করছি।