কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ভাটিরদ্বার কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে করোনায় ঝিঁমিয়ে গেছে সম্ভাবনাময় শুটকী শিল্পের কার্যক্রম। বিক্রি ও শিল্পাঞ্চল তৈরিতে সরকারী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ব্যাবসায়ীরা। কিশোরগঞ্জের হাওড়কে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছিলো মৎস আড়ৎদারি ব্যবসায় ও শুঁটকি শিল্প। কোন রকম সরকারি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণাগার না থাকায় দুটো শিল্পই আজ চরম সংকটে।
বিশ্বব্যাপী কুলিয়ারচরের টাটকা শুঁটকির বেশ কদর রয়েছে। বিশেষ করে ইন্ডিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৈদি আরব, কাতার সহ বিশ্বের অসংখ্য দেশে চাহিদা মত নিয়মিত রপ্তানি হয় কুলিয়ারচরের শুঁটকি। পুঁটি মাছের চেপা শুঁটকির চাহিদা ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম, রাজশাহী, বি- বাড়িয়া
সহ দেশ বিদেশে সমাদ্রিত। এসব শুঁটকি রপ্তানির মাধ্যমে দেশ ও সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জন করছে।

এই বছর করোনার কারণে গত মৌসুমে
উৎপাদিত শুঁটকি খুব একটা রপ্তানির মুখ দেখেনি। সংরক্ষণাগারের অভাবে যথাযথ সংরক্ষণ করতে না পারায়, গত বছর উৎপাদিত প্রায় ৫০ কোটি টাকার শুঁটকি আটকা পড়ে শুঁটকির রঙ ও মান নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য বছর বিক্রি হতো ১২শত টাকা থেকে ১৫শত টাকা কেজি দরে। করোনার কারণে তা বিক্রি করা হচ্ছে ৫শত টাকা দরে। এ বছরের নতুন শুঁটকি উঠতে শুরু করেছে ডাঙিগুলোতে। ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পের সাথে জড়ির ৫ হাজার মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করছে।
সরেজমিনে গিয়ে, দেখা যায় বিভিন্ন ডাঙ্গিতে কর্মরত নারী- পুরুষদের। কথা হয় ডাঙ্গিতে কর্মরত সুশীল চন্দ্র দাসের সাথে তিনি বলেন, ৫ বছর ধরে কাজ করছি। গত বছর ভাইরাসের কারণে প্রায় ৫০ কোটি টাকার শুটকী আটক হয়ে আছে বিভিন্ন ডাঙ্গিতে। কম দামে বিক্রি করেও করোনার কারণে ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছিনা এখন।

মাছে লবণ দেওয়া অবস্থায় কথা হয় মোঃ আক্রাম হোসেনের সাথে তিনি বলেন, আমার বাবা ও ছোট ভাই এই পেশায় জড়িত আছে। কুলিয়ারচর সমবায় মৎস্যজীবি শুটকী সমিতির সভাপতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস বলেন, এখানে ১৫০ টি ডাঙ্গি আছে। ডাঙ্গি প্রতি ২০/২৫ জন কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করছে। বোয়াল, গজার, পুঁটি, চান্দা, টেংড়া, চিকড়া, চাপিলা,বাতাসি সহ অনান্য শুঁটকী উৎপাদন করা হয় এখানে। ব্যাংক ঋণ আর মহাজনী টাকার সুদ নিয়ে এখন সঙ্কিত শুঁটকী ব্যাবসায়ীরা। সরকার যদি আমাদের সাহায্য সহযোগীতা করে তা হলে আমাদের জন্য উপকার হয়। সরকারী পদক্ষেপে এখানে শুঁটকী শিল্প গড়ে তোলাটা খুবই জরুরী।এ ব্যাপারে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, শুঁটকী শিল্পে অপার সম্ভাবনা রয়েছে কুলিয়ারচরে। অনেক ডাঙ্গির মালিক ব্যাংক ঋণ অথবা মহাজনী ঋণ নিয়ে এখনো তাদের ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার উপর করোনাকালীন সময়ে মন্দা যাচ্ছে তাদের ব্যবসা।