রাজনীতি ডেস্ক :
দীর্ঘ পাঁচ বছর রাজশাহীতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ আগমন উপলক্ষে রাজশাহীতে যেন লেগেছে উৎসবের রং। নগরীর বর্ণিল সাজ, সাধারণ মানুষের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা; এ যেন পুরোনো রাজশাহীর নতুন রূপ।
নেতাদের ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে ভরে আছে রাজশাহী শহর। কর্ণফুলী টানেল এবং নৌকার আদলে সাজানো হয় মঞ্চ। এ জনসভা থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য ভোট চান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন মাদ্রাসা মাঠে। কানায় কানায় ভরা মাদ্রাসা মাঠ; আম চত্বর থেকে জিরো পয়েন্ট; কাটাখালি থেকে সিটির হাট পুরো রাজশাহীই যেন জনসভায় পরিণত হয়।
ভোর থেকেই দলে দলে যোগ দেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন স্লোগান ও ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগ দেন। কেউ কেউ নৌকার প্রতীক নিয়ে আসেন। রং-বেরংয়ের টিশার্ট ক্যাপে রাজশাহীর রাস্তা হয়ে ওঠে রঙিন ও জাঁকজমকপূর্ণ।
রাজশাহীর সারদায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএস ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ ও প্যারেড পরিদর্শন করেন। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে পদক বিতরণ করে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
পরে তিনি সেখান থেকে হেলিকপ্টারে দুপুর আড়াইটায় রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিস মোড়ের মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় উপস্থিত হন। বেলা ৩টা ১০ মিনিটে তিনি জনসভা মঞ্চে ওঠেন। এরপরই তিনি ২৬টি প্রকল্পের ফলক উন্মোচন এবং ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। মোট ৩২টি প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা।
পরে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের জয়যাত্রা ধরে রাখতে রাজশাহীর জনসভায় নৌকায় ভোট চান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এ বাংলার মানুষের কথা ভেবেই দেশে এসেছি, পালাতে নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষ কিছু পায়। আর বিএনপি তো লুটপাট চালায়। আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই, আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই, তাই দেশের জয়যাত্রা ধরে রাখতে আপনাদের কাছে নৌকায় ভোট চাই বলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ যারা বলে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই। বিএনপির নেতারা কে? তারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কাকে নিয়ে? দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান?। যেই নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে ভেগে গিয়েছিল, সেই দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত নেতা আজ বড় বড় কথা বলে। বিএনপি-জামায়াতের পাচার হওয়া ৪০ কোটি টাকা দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
এর আগে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন প্রমুখ।