হোম অন্যান্যসারাদেশ এ মাসেই চালু হবে চট্রগ্রাম-মোংলা বন্দর অভ্যন্তরীন রুটে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল

এ মাসেই চালু হবে চট্রগ্রাম-মোংলা বন্দর অভ্যন্তরীন রুটে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 10 ভিউজ
সোহাগ মোল্লা মোংলা:
রপ্তানি খরচ কমাতে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে দুটি সমুদ্র বন্দরের মধ্যে অভ্যন্তরীন রুটে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল। চলতি (এপ্রিল) মাসের মাঝামঝি নাগাদ চট্রগ্রাম ও মোংলা বন্দরের মধ্যে এই রুটটি চালু হওয়ার কথা জানিয়েছেন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান। বৃহত্তম খুলনাঞ্চলের পণ্য আমদানি-রপ্তানি সুবিধা বাড়াতেই এমন উদ্যোগ বলেও জানায় ওই প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠার পর নানা সংকটে থাকা মৃতপ্রায় দেশের দ্বিতীয় মোংলা সমুদ্র বন্দর এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক কর্মতৎপরতায় এই বন্দরের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন হয়েছে। বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন বাড়ায় কর্মব্যস্তাতাও বেড়েছে শ্রমিকদের। একই সাথে আয়ও বেড়েছে মোংলা বন্দরের। তবে নাব্য সংকট ও ব্যবসায়ী সুবিধাকে কাজে লাগাতে না পারা এবং বাড়তি ব্যয়সহ নানা কারণে এই বন্দরে কন্টেইনার জাহাজ যাতায়াত করে মাসে কমবেশি একটি। অথচ এই অঞ্চলের মাছ, হিমায়িত পণ্য ও পাটসহ নানা ধরণের পণ্য রপ্তানির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে মোংলা বন্দর বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মোংলা বন্দরে কন্টেইনারে পণ্য আমদানি কম হয়। যার জন্য এখানে খালি কন্টেইনার পাওয়া যায় না এবং চট্রগ্রাম বন্দর থেকে খালি কন্টেইনার আনতে গেলে অতিরিক্ত ভাড়া মাশুল দিতে হয়। ফলে এখানে কন্টেইনারের ভাড়া বেশি পড়ে’। তাই চট্রগ্রাম-মোংলা রুটে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চালু হলে সময় ও রপ্তানি ব্যয় কমে আসবে’।
এদিকে এই সম্ভাবনাকে ভিন্ন আঙ্গিকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে ‘সী গ্লোরী’ নামের চট্রগ্রামের একটি শিপিং এজেন্ট। প্রতিষ্ঠানটি চট্রগ্রাম-মোংলা রুটে ছোট জাহাজে কন্টেইনার পরিবহণ করতে চায়। যাতে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে চট্রগ্রাম থেকে খালি কন্টেইনার নিয়ে মোংলা বন্দর থেকে পণ্য ভর্তি করে আবার চট্রগ্রাম হয়ে বিদেশি পাঠানো। সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে একবার জাহাজ পরিচালনা করে সুফলও মিলেছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়ীরা।
চট্রগ্রামের ‘সী গ্লোরী’ শিপিং এজেন্টের ব্যবস্থাপক মাইনুল হোসাইন বলেন, ‘যদি আমাদেরকে ফিডার হিসেবে ট্রিট করা হয়, তখন আমাদের প্রসেসগুলো আরও বেশি জটিল হয়ে যাবে। পানগাঁওয়ের মতো চট্রগ্রাম থেকে কন্টেইনার নিয়ে যাওয়া হয়, সেভাবে মোংলা বন্দরে খালি কন্টেইনার নিয়ে যাওয়া হয় তখন প্রসেসারগুলো সহজ হবে এবং এতে ব্যবসায় এ্যাক্সেল করা সম্ভব’।
মাইনুল হোসাইন আরও বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১০০ টিউজ বা ৭০টি কন্টেইনার নিয়ে চট্রগ্রাম-মোংলা বন্দরে পরীক্ষামূলক অভ্যন্তরীণ রুট পরিবহণ চালানো হয়েছে। এটি সফল হওয়ায় এখন তারা চলতি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে নিয়মিত তারা আনুষ্ঠানিকভাবে চট্রগ্রাম-মোংলা বন্দর রুটে কন্টেইনার পরিবহন শুরু করবে। এসব কন্টেইনারে মাছ, হিমায়িত পণ্যসহ পাট ভর্তি করে চট্রগ্রাম হয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে  বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (খুলনা) চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম বলেন, কন্টেইনার সংকটের কারণে আমরা বিদেশে নিয়মিত পণ্য রপ্তানি করা যাচ্ছে না। আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে উভয় বন্দরকে উদার হওয়া উচিত। যেহেতু আমাদের দেশের ভেতর হয়ে চলাচল করবে, সে হিসেবে আমদানিকারক এবং যারা চট্রগ্রাম-মোংলা রুটে জাহাজ চালু করবে তাদেরকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া উচিত। তা না হলে তারা একটা নিয়মিত করতে পারবে না।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, এই মূহুর্তে মোংলা বন্দর অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক গতিশীল এবং সম্ভাবনাময়। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে বন্দরের পরিধি। চলমান বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্দর ঘিরে এ অঞ্চলের অর্থনীতির আরও উন্নয়ন হবে। এছাড়া এই বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে সকল রকম সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। চট্রগ্রাম-মোংলা রুটে কন্টেইনার পরিবহণ কার্যকর হলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও জানান তিনি। # #

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন