আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
এল সালভাদোরে দেশটির ৫৫ হাজার ‘সন্ত্রাসী’ আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। ৭ মাস আগে প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলে সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) দেশটির বিচারমন্ত্রী গুস্তাভো ভিল্লাটোরোর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। গুস্তাভো ভিল্লাটোরোর আরও জানিয়েছেন, দেশটির আইন সভা জরুরী ক্ষমতার মেয়াদ বৃদ্ধিতে ভোট দিয়েছে।
বিচারমন্ত্রী ভিল্লাটোরোর আরও জানান, মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। এল সালভাদোরের আইন সভা পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারে ক্ষমতা দিয়ে আইন পাস করা হয়। তিনি আরও জানান, আইন সভা সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিচারমন্ত্রী জরুরী ক্ষমতার পক্ষে টুইটারে লিখেছেন, সন্ত্রাসীদের এখনই থামানো উচিত। বছরের পর বছর ধরে তারা মানুষের অধিকার হরণ করছে। মানসিক শান্তি পেতে ও সালভাদোরকে শান্তিময় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ খুবই জরুরি।
বিচারমন্ত্রী ভিল্লাটোরা বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধে জয়ী হচ্ছি এবং আমরা এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে প্রতিদিন হাজার হাজার পুলিশ ও সৈন্য মোতায়েন করব। তিনি আরও জানান, পুলিশ ও সামরিক বাহিনী এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২ হাজার ২৬টি যানবাহন, ১২ হাজার ৮৪২টি সেল ফোন ও ১৫ লাখ ডলার জব্দ করেছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, এল সালভাদোর সরকার ৪০ হাজার সন্দেহভাজন অপরাধীর জন্য বিশাল কারাগার বানাচ্ছে। এ বছরের শেষ নাগাদ কারাগারের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এদিকে মধ্য আমেরিকার দেশটিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ আটকের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জরুরী ক্ষমতা দিয়ে নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই জরুরী ক্ষমতায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কাউকে গ্রেফতারের কারণ জানার অধিকার ও গ্রেফতারকৃতদের সঙ্গে আইনজীবীদের দেখা করার অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারের পর ১৫ দিন পর্যন্ত অভিযোগ গঠন ছাড়াই আটক রাখার অধিকার দেয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও ক্রিস্টোসাল মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে ‘কয়েকজনকে নির্বিচারে গ্রেপ্তারের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে কিছু নিখোঁজ এবং নিরাপত্তা হেফাজতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে।’
জরুরী অবস্থার প্রথম অনুমোদনের পর থেকে এমন আইন রয়েছে যা সন্ত্রাসী সংগঠনের সংগে জড়িত অপরাধের জন্য বয়স কমিয়ে ১২ বছর দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ কারও বয়স যদি ১২ বছর হয় সে যদি কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয় তাহলে সে ফৌজদারী আইনে শাস্তি পাবে।