মোহাম্মদ আরীফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ :
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দান বক্সে গতকাল শনিবার সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেল। এ টাকার পরিমাণ ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা! তার সাথে পাওয়া গেছে স্বর্ণালঙ্কার সহ এক মায়ের হৃদয় নিংড়ানো চিঠি।
গত ৬ নভেম্বর শনিবার সকাল ৯ টায় পাগলা মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক খোলা হয়। সাড়ে ৯ ঘন্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় টাকা গণনার কাজ শেষ হয়। গণনা শেষে ৮টি দান সিন্দুক থেকে মোট তিন কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার পাওয়া গেছে।
সে সাথে পাগলা মসজিদের দান বাক্সে পাওয়া গেল এক মায়ের চিঠি! কথিত আছে কিশোরগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক পাাগলা মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। এ ভাবনা থেকে সব ধর্মের লোকজন এই মসজিদটিতে প্রচুর পরিমাণে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার দান করে থাকেন।
কিন্তু এবার ঘটলো ব্যতিক্রম দুটি ঘটনা। ছেলেকে হাফেজ বানাতে কয়েকটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েও পড়ার মনোযোগ বসাতে পারে নি এক মা। পড়ায় মনযোগ বসাতে না পেরে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে প্রার্থনামূলক চিঠি দিয়েছেন ছেলেটির মা।
সন্তানকে হাফেজ বানাতে চিঠিতে মা লিখেছেন, আমার ছেলের নাম মো. মোরসালিন। বয়স ১৪ বছর। ছোটবেলা থেকে ইচ্ছে ছিল তাকে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করিয়ে একজন হাফেজ বানাবো। কিন্তু আমি এই পর্যন্ত সাতটি মাদ্রাসা পরিবর্তন করেও তার মনোযোগ পড়ায় বসাতে পারিনি। এখন আপনারা আমার ছেলের জন্য একটু দোয়া করে দেবেন, যেন সে একজন হাফেজ হতে পারে।
অন্যদিকে অজ্ঞাত পরিচিত এক গৃহবধূ চিঠিতে লেখেন; হে আল্লাহ, পাগলা মসজিদের রহমতে মাসুমকে টাকা- পয়সা আসার ব্যবস্থা করে দিও। হে আল্লাহ তুমি সাহায্য কর। তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। হে আল্লাহ পাগলা মসজিদের রহমতে আমার স্বামী যেন অনেক টাকা- পয়সার মালিক হয়। সব ঋণ থেকে, অভাব থেকে- মানুষের কটু কথা থেকে মুক্তি পায়। হে আল্লাহ তুমি দয়া কর। পাগলা মসজিদের রহমতে আমার স্বামীর সব দুঃখ দূর করে দিও। অনেক আশা নিয়ে এসেছি তোমার দরবারে। খালি হাতে ফিরিয়ে দিওনা পাগলা মসজিদের রহমতে।
ইতিপূর্বে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি দান সিন্দুক থেকে পাওয়া গিয়েছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা।
