আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়ে আসছে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী আরব রাষ্ট্র জর্ডান। অবরুদ্ধ গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি, নির্বিচারে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে, তেল আবিব থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে আম্মান। দেশটির চলমান এই প্রতিবাদের ধারাবাহিকতায় এবার ইসরায়েলে বিদ্যুৎ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে জর্ডান সরকার।
সম্প্রতি জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে পানির বিনিময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো চুক্তি করবে না তার দেশ। যদিও এই চুক্তি গত মাসে হওয়ার কথা ছিল। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার আয়মান সাফাদি বলেন, আঞ্চলিক প্রকল্প নিয়ে আমাদের একটি আঞ্চলিক সংলাপ ছিল। কিন্তু এই যুদ্ধ প্রমাণ করেছে এটি আর এগোবে না। এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী সাফাদি জানান, জর্ডান আর এই চুক্তি স্বাক্ষর করবে না। আপনি কী কল্পনা করতে পারেন যখন ইসরায়েল গাজায় শিশু হত্যা অব্যাহত রেখেছে এমন মুহূর্তে জর্ডানের একজন মন্ত্রী একজন ইসরায়েলি মন্ত্রীর পাশে বসে পানির বিনিময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের চুক্তি স্বাক্ষর করছে।
১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করে জর্ডান। চুক্তির ফলে জর্ডানের দখলকৃত ভূমির প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার ফিরিয়ে দেয় ইসরায়েল। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে পানি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের সমাধান হয়। জর্ডানের উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, জর্ডান ১৯৯৪ সালে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য বৃহত্তর আরব প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। তবে সেই উদ্দেশ্য অর্জিত হয়নি। উল্টো ইসরায়েল এই চুক্তি মেনে চলেনি। তাই এই শান্তি চুক্তি আপাতত জমে থাকা ধুআ-বালিতে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে জর্ডানের প্রধান প্রচেষ্টা গাজায় ‘ইসরায়েল কর্তৃক প্রতিশোধমূলক বর্বরতার’ অবসান বলেও জানান আয়মান সাফাদি। বলেন, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন ও অপরাধ কোনোভাবে আত্মরক্ষা হিসেবে গণ্য হতে পারে না। দেশটি নিরপরাধ বেসামরিক লোকদের হত্যা করছে এবং হাসপাতালে হামলা করছে। ইসরায়েল এখন যা করছে তার একটি অংশ যদি অন্য কোনো দেশ করত, তাহলে আমরা বিশ্বের প্রতিটি কোণা থেকে ওই দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে দেখতাম।