হোম আন্তর্জাতিক একের পর এক বিক্ষোভ, চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার: রয়টার্স

একের পর এক বিক্ষোভ, চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার: রয়টার্স

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 46 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজপথে আন্দোলন করছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। সোমবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক কর্মবিরতি শুরু করে পৃথক আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

গত বছর আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত যাওয়ার পর ৮৪ বছর বয়সী নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস ১৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষের দেশের অন্তর্বর্তী প্রধানের দায়িত্ব নেন।

সেই থেকে সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, রাজনৈতিক দল এবং সামরিক বাহিনীর চাপের মুখে পড়েছে তার প্রশাসন।

রবিবার সরকার এক অধ্যাদেশ জারি করে প্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছাড়াই অসদাচরণের অভিযোগে সরকারি কর্মচারী বরখাস্তের ক্ষমতা দিলে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা একে ‘দমনমূলক’ আখ্যা দিয়ে এর প্রত্যাহার দাবি করছেন।

সোমবার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মস্থল ত্যাগ করে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুই বিভাগে ভাগ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত করার ঘোষণার পর এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিবাদের মুখে রবিবার সরকার সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। পরে ধর্মঘট স্থগিত হয়।

রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হয় যখন ছাত্রনেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক শীর্ষ নেতা দাবি করেন— রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার ও নির্বাচনকালীন সময়সূচি নিয়ে একমত হতে না পারলে ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন।

তবে পরিকল্পনাবিষয়ক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আমরা আমাদের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোথাও যাচ্ছি না। তিনি জানান, ইউনূস বাধা স্বীকার করলেও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বর্তমান সরকার একদিকে যেমন দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে চাপে রয়েছে, অন্যদিকে রয়েছে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারেরও চাপ। ইউনূস জানিয়েছেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে হতে পারে। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোটের দাবি জানিয়ে আসছে।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত সপ্তাহে এক ভাষণে ডিসেম্বরেই নির্বাচন দাবি করে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়।

এই পরিস্থিতিতে শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হঠাৎ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক ডাকেন ইউনূস এবং বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন। পরের দিন আরও বেশ কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমরা এখন যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর আমাদের অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন চেষ্টার ইঙ্গিত মিলছে। এখান থেকে আমাদের বের হতে হবে।

এই মাসেই শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। ফলে দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন