হোম আন্তর্জাতিক ইরান ‘আমেরিকার মুখে কঠিন থাপ্পড়’ দিয়েছে: খামেনি

ইরান ‘আমেরিকার মুখে কঠিন থাপ্পড়’ দিয়েছে: খামেনি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 47 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুদ্ধবিরতির ২ দিন পর নীরবতা ভাঙলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় সংঘাতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরান বিজয়ী হয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। পরে টেলিভিশনেও জাতির উদ্দেশে খামেনির ভিডিও বার্তা প্রচারিত হয়।

এক্স পোস্টে খামেনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে প্রবেশ করেছে কারণ তারা মনে করেছিল যে যদি তা না হয়, তাহলে ইহুদিবাদী শাসন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ থেকে কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।’ ইরান “বিজয়ী” হয়ে উঠতে পেরেছে এবং “আমেরিকার মুখে এক কঠিন থাপ্পড় দিয়েছে।’

পরবর্তী ইংরেজি ভাষার একটি বার্তায় খামেনি বলেছেন, ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র আমেরিকার মুখে এক কঠিন থাপ্পড় দিয়েছে।’

পরে টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও বার্তায় ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ‘আমি মিথ্যাচারী জায়নবাদী শাসনের ওপর বিজয়ের জন্য আমার অভিনন্দন জানাই। সব হৈচৈ আর দাবির মধ্যে, জায়নবাদী শাসনব্যবস্থা কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ইসলামিক রিপাবলিকের আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘মার্কিন শাসনের ওপর আমাদের প্রিয় ইরানের বিজয়ের জন্য অভিনন্দন। মার্কিন শাসন সরাসরি যুদ্ধে প্রবেশ করেছিল, কারণ তারা মনে করেছিল যে, যদি তারা এটি না করে, তাহলে জায়নবাদী শাসন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা সেই শাসনকে বাঁচানোর চেষ্টায় যুদ্ধে প্রবেশ করেছিল কিন্তু কিছুই অর্জন করতে পারেনি।’

জাতির উদ্দেশে ভাষণে খামেনি বলেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখে একটি কঠিন চপেটাঘাত করেছে। ইরান আল-উদেইদ এয়ার বেসে আক্রমণ করেছে এবং ক্ষতি সাধন করেছে, যা এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি।’

সর্বোচ্চ নেতা আরও উল্লেখ করেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিকের পক্ষে এই অঞ্চলের মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশাধিকার থাকা এবং যখনই প্রয়োজন মনে করবে তখনই পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতেও পুনরাবৃত্তি হতে পারে। যদি কোনো আগ্রাসন সংঘটিত হয়, তবে শত্রুপক্ষকে অবশ্যই ভারী মূল্য দিতে হবে।’

গত ১৩ জুন ইসরায়েল বিমান হামলার মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও একের পর এক হামলা চালায়।

২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে, ২৩ জুন সন্ধ্যায় ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি আল-উদেইদে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে।

এরপর ২৪ জুন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে তেহরান জানায়, তারা তেল আবিবকে আগ্রাসন থামাতে বাধ্য করে বিজয় অর্জন করেছে।

গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আগ্রাসন অভিযান শুরু করে। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ইরান প্রতিশোধ নেয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে ইসরায়েলি হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইরান।

২২ জুন ভোরে মার্কিন বোমারু বিমানগুলো তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ করে। পরের দিন সন্ধ্যায় তেহরান কাতারে অবস্থিত এই অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক বিমান ঘাঁটি আল উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এরপর ২৪ জুন ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল এবং ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলও ঘোষণা করে, তারা মার্কিন প্রস্তাবে রাজি। পরিবর্তে তেহরান জানায়, তারা তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করে বিজয় অর্জন করেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন