আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, আমেরিকানদের জানা উচিত যে ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে তারা কখনই কোথাও পৌঁছাতে পারবে না। ইরানের বিরুদ্ধে তাদের হুমকি পূরণ করলে প্রতিপক্ষরা মুখে কড়া থাপ্পড় মারবে।
ইরানের কাছে লেখা সাম্প্রতিক চিঠিতে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যথায় দেশটির পরমাণু স্থাপনার বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বলে হুমকি দিয়েছেন।
খামেনি বলেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের জানা উচিত ইরানের বিরুদ্ধে হুমকির ভাষা ব্যবহার করে তারা কিছুই অর্জন করতে পারবে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, তাদের ইরানি জাতির বিরুদ্ধে কোনো খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত, অন্যথায় তারা ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করবে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) তেহরানের ইমাম খোমেনি কমপ্লেক্সে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সম্বোধন করে খামেনি আরও বলেন, শত্রুরা ইরানিদের ইসলামী শিক্ষা থেকে দূরে রাখার জন্য একটি মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাচ্ছে, কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
গত চার বছরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অনেক এগিয়ে গেছে। দেশটি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি আছে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মতে, ইরানের ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ছয়টি পরমাণু বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। তবে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির আগ্রহের কথা অস্বীকার করেছে।
দুই সপ্তাহ আগে ফক্স নিউজের মারিয়া বার্তিরোমোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে ইরানি নেতাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এর একদিন পর ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে ‘শেষ মুহূর্তে’ পৌঁছেছে। আমরা তাদের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দিতে পারি না। খুব শিগগিরই কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ কয়েকদিন আগে আবুধাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের (এমবিজেড) কাছে এই চিঠি পৌঁছে দেন। এর একদিন পর এমবিজেডের দূত আনোয়ার গারগাশ তেহরান সফর করেন এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির কাছে চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
সূত্রগুলো বলছে, খামেনিকে লেখা ট্রাম্পের চিঠির ভাষা ছিল ‘কঠোর’। একদিকে নতুন পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে, অন্যদিকে ইরান যদি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখে তাহলে ‘পরিণতি ভোগ করতে হবে’ বলে হুমকি দিয়েছে।