আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানে মার্কিন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) তাদের বোর্ড অব গভর্নরসের জরুরি বৈঠক ডেকেছে। ইরানের জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় রবিবার (২২ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সংস্থার মহাপরিচালক জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি এ বৈঠক আহ্বান করেন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল এ খবর জানিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এসেছে যখন মার্কিন বাহিনী ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
আলাদা এক পোস্টে আইএইএ নিশ্চিত করেছে যে, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর এখন পর্যন্ত সাইটের বাইরের রেডিয়েশনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ইরানে পরিস্থিতি সম্পর্কে যত বেশি তথ্য পাওয়া যাবে, ততই বিস্তারিত মূল্যায়ন জানানো হবে।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা রবিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ইরানের পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইএইএ তার পরবর্তী মূল্যায়ন জানাবে।
এদিকে তেহরান এই হামলার তদন্ত দাবি করেছে।
ইরানের এসএনএন নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক সংস্থা প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি গ্রোসি’কে একটি চিঠি লিখে ওয়াশিংটনের পদক্ষেপের নিন্দা জানাতে এবং ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ গ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠিতে ইসলামি গ্রোসি’র ‘নিষ্ক্রিয়তা ও সহযোগিতার’ সমালোচনাও করেছেন এবং জানিয়েছেন, এই বিষয়ে ইরান আইনি পথে এগোবে।
ইরানের এক জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা সতর্ক করেছেন, হামলার জবাবে তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে সরে আসতে পারে।
ইরানের সংসদের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আব্বাস গোলরু এক্সে লিখেছেন, চুক্তির ১০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘বিষয়গত অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে’ কোনও দেশ এই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার অধিকার রাখে।
তিনি লিখেছেন, এই চুক্তির প্রতিটি পক্ষ তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের চর্চার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, এই চুক্তির বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কিত অসাধারণ ঘটনা যদি তাদের দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলে, তাহলে তারা চুক্তি থেকে সরে আসতে পারবে।
এর আগে রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা — ফোর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে — বোমা হামলা চালিয়েছে।
এই হামলাগুলো ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন-সমর্থিত ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা শুরু হয়েছিল ১৩ জুন। এরপর থেকে ইরানও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে।