হোম অন্যান্যসারাদেশ ইবি সাংবাদিকের উপর হামলায় লিখিত অভিযোগ, ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদ 

ইবি সাংবাদিকের উপর হামলায় লিখিত অভিযোগ, ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদ 

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 144 ভিউজ
খাদেমুল ইসলাম ফরহাদ:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারির ভিডিও করতে গেলে তিন সাংবাদিকদের মারধর করেছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে রোববার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী তিন সাংবাদিক। এদিকে একই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইবি শাখা ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ ও ইবি শাখা ছাত্র শিবির। এতে তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অতিদ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এছাড়া রোববার দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে একই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও জাতীয় দৈনিক আমাদের বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আরিফ বিল্লাহ ও দৈনিক আজকালের খবরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রবিউল আলম এবং একই শিক্ষাবর্ষের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ও বার্তা২৪ এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুর-ই আলম।
অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই ৩৬ হল ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা পারভীন তিনা, নাহিদ হাসান, সৌরভ দত্ত, সাব্বির, মিনহাজ, রিয়াজ মোর্শেদ, সৌরভ সোহাগ, পান্না এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম, হৃদয়, রাকিব, অজিল, মশিউর রহমান রিয়নসহ ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগ ও ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে নিজেদের ভিতরে হাতাহাতিতে জড়ান ২০২০-২১ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের মারামারির ভিডিও করতে গেলে আরিফ বিল্লাহ নামের এক সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেন আফসানা পারভিন তিনা। পরে তার উসকানিতে দল বেঁধে তেড়ে এসে সেই সাংবাদিককে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন বিভাগটির অন্য শিক্ষার্থীরা। এসময় আশেপাশের কয়েকজন ঠেকাতে গেলেও তাকে ঘিরে ফেলে মারধর করেন।
এরপর নুর-ই আলম নামের আরেক সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহকে মারধরের ভিডিও করতে গেলে তাকেও মারধর করেন তারা। পরবর্তীতে একইভাবে আরেক সাংবাদিক রবিউল আলমের উপরেও ঝাপিয়ে পড়েন তারা। এভাবে পরপর তিনজন সাংবাদিককে দফায় দফায় মারধর করা হয়। ঘটনার পরবর্তীতে সেখানে অন্য সাংবাদিকরা সমাধানের জন্য গেলে তাদের সাথেও বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাঠে থাকাকালীন সময়ে কয়েকজন সাংবাদিকে মারধর করা হয়।
এদিকে আরিফ বিল্লাহর কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন ২২ ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকালে ফোনটি রিসেট অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখানে ফোনের সকল জরুরি ডকুমেন্টস ডিলেট করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, আমি হট্টগোলের আওয়াজ শুনে মাঠের দিকে এগিয়ে যায়। গিয়ে দেখি কয়েকজন মিলে একজন সাংবাদিককে মারধর করছে। তার পাশে আরেক সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে তাকেও ভিডিও বন্ধ করতে বলা হয়। ভিডিও বন্ধ না করায় তাকে এসে লাথি মারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, এ ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড আফসানা পারভীন তিনা। মূলত তার উসকানিতেই সাংবাদিকদের মারধর করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেন, আমরা আমাদের পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে ভিডিও করছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা অতিদ্রুত অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি এবং আমাদের নিরাপত্তা দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আফসানা পারভীন টিনা বলেন, বিভাগের স্যাররা বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তাই এ-ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
আরেক অভিযুক্ত নাহিদ হাসান বলেন, বিভাগের আন্তঃসেশন খেলায় নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এসময় আমি সাংবাদিক কাউকে মারিনি। আমার গলা ধরছে তখন আমি কি করব! এ কথা বলেই তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রতিবেদকের কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমরা অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের সাথে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন