হোম অন্যান্যসারাদেশ ইবি শিক্ষার্থী হত্যার তদন্তে অবহেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ইবি শিক্ষার্থী হত্যার তদন্তে অবহেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 36 ভিউজ
ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অবহেলা ও জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে বিলম্বের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির উদ্যোগে এ মানববন্ধন করা হয়।
এসময় ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদ, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হা্বিব ও সদস্য রাফিজ আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর প্রায় দুই মাস হতে চললেও প্রশাসন এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তার হত্যার ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার প্রায় দেড় মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একন পর্যন্ত তার হত্যার তদন্ত সিআইডির কাছে দেয়নি। তার মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে অনেক আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে, তারা প্রশাসন থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। প্রশাসনের নিশ্চুপ থাকা প্রমাণ করে এই হত্যার সাথে তাদের যোগসাজশ আছে।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আমাদের এই প্রশাসন এতটাই মেরুদণ্ডহীন, এতটাই বিবেকহীন যে শুধুমাত্র আমাদেরকে বলতে পারে, আমাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারে, কিন্তু তারা তা কাজে বাস্তবায়ন করতে পারে না। আমরা বিপ্লব পরবর্তী প্রশাসনকে সাদরে গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু তারা দায়িত্বে আসার এক বছর পর আমাদের ভাইয়ের লাশ উপহার দিয়েছে। আমরা এই লজ্জা রাখার জায়গা পাচ্ছি না। তারা শুধু বক্তব্য দিয়েই আমাদের আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আমরা প্রশাসনকে হুশিয়ারি করে বলতে চাই, আমরা আপনাদেরকে যেমন সম্মানের সাথে গ্রহণ করেছি। যদি আপনারা শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হন। তাহলে সেই সম্মান নিয়ে এখান থেকে যেতে পারবেন না। আমরা অতিদ্রুত তার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও খুনিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নতুবা আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দিব।
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যার প্রায় দুই মাস হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো অফিশিয়ালি তদন্তের দায়িত্ব দায়িত্ব কাউকে দেয়া হয় নাই, যেটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। আর এটা কীসের জন্য দেওয়া হয় নাই? কাদের ইঙ্গিতে দেয়া হয় নাই? কারা এর পিছনে কাজ করছে? নাকি নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই এতো দেরি হওয়ার কথা? এটা একটু প্রশাসনকে খুঁচিয়ে দেখা দরকার। যদি এটা পরিকল্পিত বিলম্বিত করা হয় তাহলে কারা করছে তাদেরকে ফাইন্ড আউট করে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করা হোক। যদি এটা নিয়ে আরও কোন মানে জল ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হয়, অপরাধীদেরকে বাঁচিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়, অপরাধীদেরকে কোনোভাবে প্রটেকশন দেয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দিব।
তিনি আরও বলেন, যদি প্রশাসন এইটা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্ট, সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং প্রত্যেকটা রাজনৈতিক সংগঠন থেকে কর্মসূচি ঘোষণা হবে ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফরেনসিক রিপোর্টে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করা হয়। পরে তার বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ দেলোয়ার গত ৪ আগস্ট ইবি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন এবং তদন্তভার সিআইডির কাছে দেওয়ার দাবি জানান। তার বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে মৌখিকভাবে সিআইডির হাতে তদন্তভার দিলেও প্রায় ১ মাস হতে চললেও এখনো অফিসিয়ালি দায়িত্ব পায়নি সিআইডি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন