নিউজ ডেস্ক:
দেশের ইন্টারনেট সেবায় নতুন খসড়া নীতিমালা কার্যকর হলে গ্রাহক পর্যায়ে সেবার খরচ ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলে জানিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি আমিনুল হাকিম এবং মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া।
সংগঠনটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রস্তাবিত নীতিমালায় অতিরিক্ত ফি, রাজস্ব ভাগাভাগি ও লাইসেন্স নবায়নের উচ্চ ব্যয় আরোপ করা হয়েছে। এতে শুধু গ্রাহকেরই নয়, দেশীয় ইন্টারনেট উদ্যোক্তাদেরও আর্থিক চাপ বাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘নতুন নীতিমালায় সব সুবিধাই বিদেশি কোম্পানি স্টারলিংকের পক্ষে গেছে। যেখানে স্টারলিংক মাত্র ১২ লাখ টাকায় অনুমোদন পাচ্ছে, সেখানে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ বৈষম্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান নীতিমালায় মোবাইল ফোন অপারেটররা সব দিক থেকে উপকৃত হচ্ছে। অথচ এরা অধিকাংশই বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এতে দেশীয় উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেন না। রাষ্ট্রের স্বার্থে এই নীতিগত বৈষম্যের ব্যাখ্যা প্রয়োজন।’
স্বাগত বক্তব্যে মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রস্তাবিত গাইডলাইন বাস্তবায়িত হলে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে এবং গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। এটা জনগণের স্বার্থবিরোধী। আমরা চাই, নীতিনির্ধারকরা জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিন।’
ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে: আইএসপিএবি
তিনি আরও বলেন, ‘ইন্টারনেট এখন বিলাস নয়, মৌলিক সেবা। খরচ বাড়ানো মানে ডিজিটাল বাংলাদেশে ব্যাঘাত ঘটানো।’
খরচ ও রাজস্ব বৃদ্ধির প্রভাব, আইএসপিএবির হিসাব অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে খরচ বাড়বে ২০ ভাগ পর্যন্ত ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডার (এফটিএসপি)
খরচ ও রাজস্ব বৃদ্ধির প্রভাব বিষয়ে আইএসপিএবির হিসাব অনুযায়ী- গ্রাহক পর্যায়ে খরচ বাড়বে ২০ শতাংশ পর্যন্ত এফটিএসপি (ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডার) অপারেটরদের ক্রয়মূল্য বাড়বে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত। নতুন করে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ারিং এবং ১ শতাংশ সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড (এসওএফ) আরোপ করা হচ্ছে। এতে উচ্চ লাইসেন্স ফি ও প্রশাসনিক চার্জ সরাসরি ব্রডব্যান্ড প্যাকেজের দাম বাড়াবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইএসপিএবি মনে করে, খসড়া নীতিমালায় মোবাইল ফোন অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস এক্সেস (এফডব্লিউএ) এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অন্যায্য প্রতিযোগিতা তৈরি করবে। এই প্রক্রিয়ার আড়ালে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড কানেক্টিভিটি ব্যবসায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ অনিশ্চয়তায় পড়বে।
আইএসপিএবির সাত দফা দাবিগুলো হচ্ছে, সিএমএসপি গাইডলাইন থেকে এফডব্লিউএ বা ওয়্যারলেস ওয়াই-ফাই সংযোগ অপসারণ, সিএমএসপি গাইডলাইন থেকে ফাইবার কানেক্টিভিটি স্থাপনের অনুমতি বাতিল, আইএসএম/ওয়াইফাই ব্যান্ডের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিষিদ্ধ, অবকাঠামো শেয়ারিং সংক্রান্ত স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান, রেভিনিউ শেয়ারিং ও লাইসেন্স ফি পুনর্বিবেচনা, আইপিটিএসপি এসএমএস সার্ভিস ও মোবাইল ডায়ালার বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা, এফটিএসপি ও জেলা এফটিএসপি অপারেটরদের মধ্যে বৈষম্য দূর করা।
