আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইতালির ভোজ্যতেলের বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। দাম বেড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও চরম বিপাকে পড়েছেন।
এ যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। করোনায় বিপর্যস্ত ইতালির অর্থনীতি। এবার রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও পড়েছে সেখানে। দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম ২০০৬ সালের পর এবার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে শতকরা ৬০ ভাগের বেশি। বাজারে সংকট দেখা দেওয়ায় ক্রেতাদের কাছে দুই লিটারের বেশি তেল বিক্রি করছে না সুপার মার্কেটগুলোতে।
এ অবস্থায় চরম বিপাকে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, এটা সত্য যে যুদ্ধের কারণে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। কিন্তু যুদ্ধের চেয়ে দাম বৃদ্ধি ভালো। এই মুহূর্তে ইউক্রেনের নাগরিকদের আমাদের সাহায্য করা উচিত।
ইতালির রাজধানী রোমসহ দেশটির প্রায় সব প্রদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে জ্বালানি তেলের দাম বাংলাদেশি টাকায় ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত দুদিন ধরে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
এদিকে ক্রেতা না পেলে আগামী এপ্রিল থেকে অপরিশোধিত তেলের উত্তোলন ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে রাশিয়া। সে ক্ষেত্রে বিশ্বকে তেল সরবরাহে ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়তে হবে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা-আইইএ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের জেরে মস্কোর ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার পর শুধু রাশিয়া নয়, বিশ্বব্যাপী প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে এই সংকট আরও গভীর হতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের যে চাহিদা তা পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্ব থেকে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার যে চেষ্টা চলছে, তাতে পশ্চিমা দেশগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মনে করছেন তারা।
মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞার জেরে রাশিয়ার তেল নেওয়া থেকে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন দেশ। আর ক্রেতা কমে গেলে আগামী মাস থেকেই তেল উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে দেশটি। সে ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে ভয়াবহ সংকট তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা আইইএ।
সংস্থাটির সবশেষ জ্বালানি বাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার জেরে এপ্রিল থেকে তেলের দৈনিক উৎপাদন ৩০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে ফেলতে পারে রাশিয়া। তবে এ সংকট একমাত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতই পূরণ করতে পারে। ওপেকের অন্য দেশগুলোও চুক্তি ও চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বাড়াতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি।