বাণিজ্য ডেস্ক :
কেজিতে ৬ টাকা বাড়তি দামে ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে। রোপা আমনের ভরা মৌসুমে হঠাৎ দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক। উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে শঙ্কায় তারা। তাই উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে মূল্য কমানোর দাবি তাদের।
চলছে রোপা আমনের ভরা মৌসুম। তাই মাঠে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। তবে এ অবস্থায় হঠাৎ করে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
কেজিপ্রতি বাড়ানো হয়েছে ৬ টাকা। এতে আবাদের খরচ বাড়ার শঙ্কায় প্রান্তিক চাষি। কৃষকের দাবি, বিঘা প্রতি ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে তাদের।
তারা বলেন, প্রতি বস্তা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে আমাদের বিঘা প্রতি ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতো। তবে এখন আমাদের ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এভাবে সারের দাম বাড়লে তো আমরা চলতে পারব না। আমরা তো মারা পড়ে যাব। আমরা কীভাবে চাষাবাদ করব। দাম বাড়ায় আমাদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে অনাবৃষ্টির কারণে এ বছর সেচ দিয়ে ধান আবাদ করতে কৃষককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থায় ধান উৎপাদনের খরচ উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
একজন কৃষক বলেন, সার ও তেলের দাম বাড়ায় মানুষ এখন চাষাবাদ বাদ দিয়ে দিচ্ছে। কৃষক যদি ধান চাষ না করে, তাহলে দেশের অবস্থা তো অনেক খারাপ হয়ে যাবে। বাইরের থেকে চাল এনে তো দেশ চালানো সম্ভব না।
সারের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকদের প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণ সার নিতে দেখা গেছে। ৪০ কেজি নিতে এসে দাম বাড়ার কথা শুনে কেউ কেউ নিচ্ছেন ২০ থেকে ২৫ কেজি। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় কৃষক নেতারা।
এবিষয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞ আবুল আজাদ বলেন, আগামীতে কৃষকরা যে উৎপাদন করবে, সে ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। উচ্চ মূল্যে তাকে উৎপাদন করতে হচ্ছে, কিন্তু উৎপাদিত ফসলের সে মূল্যটা কৃষক পাচ্ছে না। এ জায়গাটিতে কৃষক সমাজের জন্য একটি ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে দেশের দুই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ফার্টিলাইজার ও যমুনা ফার্টিলাইজার কারখানাতে সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
ইউরিয়া সারের ব্যবহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে এবং চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে কৃষক পর্যায়ে প্রতিকেজি ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দাম বাড়ানোর পরও কেজিতে ৫৯ টাকা ভর্তুকি গুণতে হবে সরকারকে।