আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় সমঝোতার জন্য তিনি প্রস্তুত। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, রুশ বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প নিজেকে সমঝোতার বিশেষজ্ঞ হিসেবে হাজির করেন এবং ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত বই ‘ট্রাম্প: দ্য আর্ট অব দ্য ডিল’ -এর লেখকও তিনি। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তবে কীভাবে এটি সম্ভব করবেন, সে বিষয়ে তিনি এখনও বিস্তারিত কিছু বলেননি।
রাশিয়ার বার্ষিক টেলিভিশন প্রশ্নোত্তর সেশনে পুতিন বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত। তিনি উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে বহু বছর ধরে তার কোনও কথা হয়নি।
ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় রাশিয়া কী প্রস্তাব দিতে পারে, এমন প্রশ্নে পুতিন বলেন, রাশিয়া দুর্বল অবস্থানে নেই। বরং ২০২২ সালে ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলেছি, আমরা আলোচনা ও সমঝোতার জন্য প্রস্তুত।
তিনি আরও দাবি করেন, আমাদের বাহিনী পুরো ফ্রন্টজুড়ে অগ্রসর হচ্ছে এবং শিগগিরই ইউক্রেনীয় বাহিনী লড়াই চালানোর মতো সেনা সংকটে পড়বে। তবে সমঝোতার জন্য উভয় পক্ষকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।
রয়টার্স গত মাসে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে পুতিন রাজি। তবে তিনি কোনও ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন এবং কিয়েভকে ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা ত্যাগ করতে বলেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতায় প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন
সিরিয়ায় রুশ সামরিক ঘাঁটির ভবিষ্যৎ নিয়ে পুতিন বলেন, মস্কো নতুন শাসকদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে এবং বেশিরভাগ মানুষ ঘাঁটি রাখার পক্ষে। তবে ঘাঁটি রাখা হবে কিনা, তা নিয়ে রাশিয়া ভাববে। মধ্যপ্রাচ্যে রুশ প্রভাবের পতন নিয়ে গুজবকে তিনি অতিরঞ্জিত বলে অভিহিত করেন।
সিরিয়ায় ২০১২ সালে অপহৃত মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টাইসের বিষয়ে পুতিন জানান, তিনি সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবং বর্তমান নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন। টাইসের পরিবার পুতিনকে চিঠি লিখে সাহায্য চেয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং মস্কো ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে ১৯৬২ সালের কিউবার মিসাইল সংকটের পর সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হয়েছে।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্কের মতো জায়গাগুলো হুমকির মুখে ফেলেছে। তিনি বলেন, যুদ্ধ জটিল এবং ভবিষ্যৎ অনুমান করা কঠিন।
তবে তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়া তাদের ‘প্রাথমিক লক্ষ্য’ পূরণের দিকে এগোচ্ছে।
রাশিয়ার ওরেশনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে অপরাজেয় হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি। এটি ইউক্রেনের একটি সামরিক কারখানায় পরীক্ষা করা হয়েছে। পুতিন বলেন, পশ্চিমা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটি ঠেকাতে পারে কিনা, তা পরীক্ষা করতে চাইলে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু তারা কি প্রস্তুত?