নিজস্ব প্রতিনিধি :
বৈশ্বিক উষ্ণতার মুখে জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে দেশের ৮৩৪ বর্গমাইলের উপকূল বিপন্ন প্রায় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এর ফল হিসেবে বাড়ছে দুর্যোগ, একের পর এক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। সেই সাথে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে বাংলাদেশ উপকূল ভাগের বিস্তীর্ণ এলাকা। কোথাও লোনা কোথাও মিষ্টি পানির দাপট জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলছে। মানুষ হচ্ছে উদ্বাস্তু, ধ্বংস হচ্ছে কৃষিজ বনজ ও প্রাণিজ সম্পদ। একদিন নয়, দুদিন নয় বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার এই ক্ষিপ্র গ্রাস জীবনযাত্রাকে থমকে দিতে চলেছে।
জলবায়ু পরির্তনের কারণে বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি যখন এমন, তখন বলা যায় শুধু নিন্ম এলাকা নয় জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হচ্ছে পৌর এলাকাগুলোও। তাই বাদ পড়েনি সাতক্ষীরা পৌর এলাকা ও তৎসংলগ্ন খাল-বিল, নদী-নালা, বসতিও জনস্থাপনা।
সাতক্ষীরা উপক‚লের মানুষ বিশ^াস করে কপোতাক্ষ বাঁচলে আমরা বাঁচবো, বেতনা বাঁচলে আমাদের জীবন বাঁচবে, আর মরিচ্চাপ বাঁচলে সাতক্ষীরা বাঁচবে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপট হচ্ছে মুমূর্ষু কপোতাক্ষ নতুন প্রাণ পেয়ে রোগগ্রস্তের মতো দুর্বল হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বেতনা মৃত, মরিচ্চাপও প্রবাহ হারিয়ে এখন শুকনো খালের রূপ পেয়েছে। তারা পলিতে ভরাট হয়েছে। পানি ধারণের কোনো ক্ষমতাই নেই তাদের। এই তিন নদী ঘিরে রেখেছে সাতক্ষীরার একাংশকে।
বেহাল বেতনা
দেড়শ’ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বেতনা এখন পলি জমে শুকিয়ে ক্ষীণকায়। জেগে উঠেছে বিস্তীর্ণ চর। আর এই চর দখলে নিয়েছে মানুষ। গড়ে তুলেছে ইটের ভাটা, বসতবাড়ি, দোকানপাট, বাজারঘাট। যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে বেতনা চাপা পড়েছে দখলদারিত্বে। এর পেছনে রয়েছে কিছু মানুষের রাজনৈতিক অভিলাস, প্রশাসনিক দুর্বলতা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতি। অকেজো হয়ে গেছে শাল্যে, বিনেরপোতা ও ছাগলার ¯øুইস গেটগুলো। নদীর বুক প্রায় ৫ ফুট উঁচু হয়ে যাওয়ায় দুই তীরের বাড়িঘর পড়ে রয়েছে ৫ ফুট নিচে। বৃষ্টি নামলে এ এলাকার প্রায় ২৫ টি গ্রাম তলিয়ে যায় পানির নিচে। নদীর বুকে গরু ছাগল চরে, এভাবেই অস্তিত্ব হারিয়েছে বেতনা।
জলাবদ্ধতার সময় নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে। সে সময় জন্ম নেওয়া শিশু প্রতিবন্ধী, অথবা পুষ্টির অভাবে হাড় জিরজিরে হয়ে যায়। মা ও শিশুসহ সব বয়সের মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়। জলাবদ্ধতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে থাকে। ছড়িয়ে পড়ে ডায়রিয়া। সচরাচর মা ও শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে থাকে। দামারপোতা বিল, শাল্যের বিল, মাছখোলার বিল, বেনেরপোতার বিল, ডাইয়ের বিল, ঘুড্ডেরডাঙ্গির বিল, রামকৃষ্ণপুর বিল, এমন দশটি বিলের পানি বেতনায় নিষ্কাশিত হতো। এখন সেই পানি সরতে না পারায় তা বিল জলা তলিয়ে থাকে। এখনও বেতনা পাড়ের মানুষ মোটর বসিয়ে পানি সরিয়ে ধান চাষ করছে। বছরের বাকি সময় তারা ওইসব বিল জলায় সাদা মাছের চাষ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। এমন অবস্থা চলছে বছরের পর বছর।
বেতনা পাড়ের মানুষ জানান, নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমের পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় প্রতিবছর ছয় মাস ধরে এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকে। এ কারণে বেতনা তীরে কোন ফসল নেই। গাছ-গাছালি মরে যাচ্ছে। হাঁস-মুরগি গবাদি পশু পালনেরও সুযোগ হারিয়ে গেছে। যে বেতনা তীরে কর্মসংস্থানের প্রাণ চা ল্য ছিল, সেই বেতনার দুই ধারের মানুষ কাজ না পেয়ে এদিক ওদিক চলে গেছে। বেতনা তীরে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সেখানে রাস্তা ঘাট নেই। এখন নদীতে নৌকা চলে না। কাজের খোঁজে মানুষ পেশা বদল করছে। জলাবদ্ধতাকালীন শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না। সবাই ঘর-বারান্দায় বন্দী হয়ে থাকে, চারদিকে বিষাক্ত পানি। এ পানিতে চলাফেরা করলে চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়ে। আর এই পানি বর্ষা মওসুমে হু হু করে ঢুকে পড়ছে সাতক্ষীরা পৌর এলাকায়।
বছর কয়েক আগে বুজে যাওয়া বেতনা খনন শুরু করেছিল সরকার। কিন্তু খননের কিছুদিনের মধ্যেই আবারও পলিতে ছাপিয়ে গেছে বেতনা। বর্ষা মৌসুমের আগে এই খনন কাজ চালালেও বর্ষার শুরুতেই দুই পাশের মাটি ধসে পড়ে বেতনা সেই বিকৃত চেহারায় ফিরে গেছে। পানিতে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে ব্রহ্মরাজপুর, ধুলিহর, ফিংড়ী, ঝাউডাঙা, লাবসা, বল্লী ছাড়াও সংলগ্ন তালা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। জলাবদ্ধতার কারণে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া ও পয়ঃনিষ্কাশন একটি বড় সমস্যা। বেতনা পাড়ের শিশুরা পারিবারিক দারিদ্র্য, যোগাযোগ সংকট এবং অন্যান্য কারণে স্কুল ছেড়ে কাজের সন্ধানে এদিক ওদিক চলে যাচ্ছে। এখন এলাকায় কর্মসংস্থানের খুবই অভাব। ক্ষেত নেই, ফসলও নেই। পেয়ারা, পেঁপে, সজিনা কাঁঠালসহ নানা ধরনের ফল ফলাদির গাছ অকালে মারা গেছে।
বেতনা তীরে জলাবদ্ধতার কারণে প্রতিটি পরিবারে পুষ্টিহীনতা দেখা দিয়েছে। বেতনা খনন করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জোরালো দাবি তুলে গ্রামবাসী বলেন, খননের মাটি ফেলতে হবে নদীর মূল সীমানার বাইরে। তাহলে বৃষ্টিতে ধুয়ে আবার নদীতে পড়বে না। এছাড়া বেতনার সাথে সংযুক্ত সকল খাল উন্মুক্ত করে স্লুইস গেটগুলো সচল করতে হবে। বেতনা পাড়ে সুপেয় পানির চরম সংকট রয়েছে। টিউবওয়েলগুলোতে নোনা পানি ওঠে। ফলে তাদের খেতে হয় পুকুরের পানি।
মৃত মরিচ্চাপ
দেড়শ’ কিলোমিটারের বেতনা নদী এখন ছয় কিলোমিটারে এসে কোনোমতে টিকে রয়েছে। ৩০ কিলোমিটারের মরিচ্চাপ নদী কপোতাক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চার কিলোমিটারে এসে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। সাতক্ষীরার এই দুই নদী এখন বদ্ধ জলাধারে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে অস্তিত্ব হারিয়েছে সাতক্ষীরার আদি যমুনা নদী। জেলার পলিজমা এসব নদ-নদীর দুই তীরে বসবাসকারী ২০ লাখ মানুষ গত তিন দশক ধরে জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন। তারা পরিবেশ ও তাদের জীবিকা হারিয়ে ফেলছেন।
এ অ লে স্বাভাবিক বসতি থাকবে কিনা তা নিয়ে শংকিত জনগণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ পশ্চিমের এ অ ল বসবাসের অনুপযোগী এমনকি পরিত্যক্তও হতে পারে। জেলার সব নদ নদীতে এখনও রয়েছে হাজার হাজার নেট পাটা। এসব নদীর পাড়েই গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। দখলকৃত নদী চরে লোনা পানি তুলে অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের কারণে এলাকায় পরিবেশগত ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে। কৃষি ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গাছ-পালা মরে যাচ্ছে। নদীর যেখানে সেখানে অপরিকল্পিত স্লুইসগেট স্থাপন করে পানি প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। মরিচ্চাপ নদীর পানি এখন আর কপোতাক্ষে প্রবাহিত হয় না। মানুষ পায়ে হেঁটে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী পার হয়। ইছামতির শাখা নদী কাকশিয়ালি, সাপমারা, লাবণ্যবতীও মরণাপন্ন অবস্থায় চলে গেছে। এসব নদী তীরের মানুষ ভুগছে জলাবদ্ধতার যন্ত্রণায়। তারা হারিয়েছেন তাদের আদি পেশা, কুটির শিল্প, গবাদি পশুপালন ও বনায়ন। তাদের বাড়িঘর বারবার ভাঙনের কবলে পড়েছে। উৎপাদনহীনতার কারণে খাদ্য নিরাপত্তার মুখেও পড়ছেন তারা।
সুন্দরবনের নদ-নদী ভরাট হয়ে আসছে। ফলে অতিমাত্রার বৃষ্টি ও দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা আছড়ে পড়ছে উপকূল ভাগে, বৃদ্ধি পাচ্ছে লবণাক্ততা। উপকূলীয় বাঁধ বারবার ভেঙ্গে যাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙ্গন, দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে। গত তিন দশক ধরে তারা এসব যন্ত্রণায় ভুগছেন।
নদী খননই এখন প্রধান কাজ। কেবল খনন ও বেতনা নদীতে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) বাস্তবায়ন করে মরিচ্চাপ নদীকে টিআরএম’র উপযোগী করে তোলা সম্ভব। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলোচ্ছ্বাস রোধে উপক‚লীয় বাঁধ আরও উঁচু টেকসই এবং মজবুত করতে হবে। বেতনা নদীর আশাশুনির বুধহাটা থেকে সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গা এবং আশাশুনি সদর থেকে বালিথার ত্রিমোহিনী পর্যন্ত মরিচ্চাপ নদী খননের তাগিদ দিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। তার আগে নদী পাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে।
সরকার কপোতাক্ষের দ্বিতীয় ফেজ খননে ৫৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ায় কাজ শুরু হয়েছে। অপরদিকে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী এবং সংলগ্ন ৮২টি সংযোগ খাল খননে বরাদ্দ এসেছে ৪৭৬ কোটি টাকা। দীর্ঘমেয়াদী এই প্রকল্পগুলির কাজ বৈকারিতে এবং ফিংড়ীতে শুরু হলেও তা নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় সরকারের এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এখন সুদূরপ্রসারী।
এরই মধ্যে বর্ষা মৌসুম আসার আগে জলাবদ্ধতা রোধে কার্যকর বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এজন্য প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে বেতনা পাড়ের ১০টি জলাবদ্ধ বিলে বেড়িবাঁধ কেটে দিতে হবে। সাতক্ষীরার প্রাণসায়ের খাল এর দুই মুখ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। এছাড়া পৌর এলাকার পানি সরানোর জন্য যে ড্রেনেজ দরকার তা জরুরী ভিত্তিতে তৈরী করতে হবে। একইসাথে ভাড়–খালি খাল পুনঃখনন করে মরিচ্চাপে মিশিয়ে ইছামতির দিকে প্রবাহিত করাতে হবে। বর্ষা মৌসুম দুই মাসের হলেও এর স্থায়িত্ব কমপক্ষে ৬ মাস। এই ৬ মাস যাবত পৌর এলাকা এবং সংলগ্ন কয়েকটি ইউনিয়ন যেমন বল্লী, ঝাউডাঙা, লাবসা, ব্রহ্মরাজপুর, ধুলিহর এলাকা পানিমগ্ন হয়ে থাকে। বর্ষার এই পানি সরানোর উদ্যোগ মৌসুম শুরু হবার আগেই গ্রহণ করার তাগিদ রয়েছে জনগণের। কারণ ইতোপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কার্যক্রম বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই আরম্ভ করা হয়। বৃষ্টির পানির ঢলে সেই খনন কাজ অকেজো হয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে যেভাবে বেতনা খননের নামে কাজ করা হয়েছিল তা পরবর্তীতে বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে মরিচ্চাপ খনন করেও তা জনগণের কোন উপকারে আসেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই দুর্নীতি রোধে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার এবং খননে প্রশাসনিক নজরদারি বৃদ্ধি করা দরকার। বর্ষা শুরুর আগেই জরুরী ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে একদিকে যেমন দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে অপরদিকে জনগণের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করানো যাবে। এজন্য সম্মিলিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খননকাজ ও সাতক্ষীরা পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে জরুরী ভিত্তিতে হাত দিতে হবে।
সামগ্রিকভাবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ও পৌরসভার জলাবদ্ধতা দূরীকরণে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তার মধ্যে রয়েছে-
১. বেতনা ও মরিচ্চাপ খনন। সেই সাথে দুই তীরের দখলদারদের উচ্ছেদ করা।
২. পৌরসভাকে পুরোপুরি ড্রেনেজ নেটওয়ার্কের মধ্যে আনতে হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য দুই মুখ উন্মুক্ত প্রাণসায়ের খাল ব্যবহার করতে হবে।
৩. আন্তঃনদী সংযোগ বিশেষ করে ইছামতি, মরিচ্চাপ, খোলপেটুয়া, বেতনা, শালিখা ও কপোতাক্ষকে খননের আওতায় এনে চিরায়ত নিয়মে পানিপ্রবাহ সচল করতে হবে।
৪. নদীগুলোর সাথে সংযুক্ত সবগুলি খাল পুনঃখনন করে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। একইসাথে অকেজো হয়ে পড়ে থাকা ¯øুইসগেটগুলো সংস্কার করতে হবে।
৫. চিংড়ী চাষের জন্য ছোট ছোট বেড়িবাঁধ দিয়ে বিলখালের পানি আটকে রাখার ফলে জলাবদ্ধতার স্থায়িত্ব বাড়ার প্রেক্ষিতে পরিকল্পনাহীন চিংড়ী ও মৎস্য চাষ বন্ধ করতে হবে। একইসাথে পরিকল্পিতভাবে মৎস্য শিল্পে চাষ বৃদ্ধি করা যায়।
৬. নদীগুলো খননের সঙ্গে সঙ্গে সংলগ্ন বেড়িবাঁধগুলোও টেকসই করতে হবে যাতে বছর বছর এসব বেড়িবাঁধ ভেঙে চুরমার না হয়ে যায়। বেড়িবাঁধে বনায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
৭. নদী ও খালের ওপর হঠাৎ করেই কোন ব্রীজ কালভার্ট না করার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এতে পানিপ্রবাহ বিঘ্নিত হয়।
৮.অকেজো স্লুইসগেটগুলো সচল করতে হবে।
৯. বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে।
জলাবদ্ধতা দূরীকরণে নদী ও খাল খননের মত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন যেহেতু সময়সাপেক্ষ বিষয়। সেহেতু জরুরী ভিত্তিতে সাতক্ষীরার পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে এবং আশপাশের চিংড়ী ঘেরের জন্য দেওয়া বেড়িবাঁধগুলি গুড়িয়ে দিতে হবে।
(প্রবন্ধটি বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ-বারসিক ও সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সম্ভব্য জলাবদ্ধতা দূরীকরণে করণীয় বিষয়ক নাগরিক সংলাপে পঠিত)