হোম ফিচার আশাশুনি বড়দল ধর্ষনের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বেপরোয়া মারপিটে গৃহবধু গুরুত্বর আহত

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :

আশাশুনির বড় গৃহবধুকে ধর্ষনের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বেপরোয়া মারপিট করে গুরুত্বর আহত দলে এক গৃহবধুকে ধর্ষনের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বেপরোয়া মারপিট করে গুরুত্বর আহত করা হয়েছে। গতকাল রাত্র ৮.০০ ঘটিকর দিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বড়দল ইউনিয়ন এর গোয়ালডাঙ্গা গ্রামে আনিছ গাজীর বাড়ীতে।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলার সুত্রে ও এলাকা ঘুরে ভিকটিমের পরিবার সহ আশপাশের লোকজনের সাথে কথা বললে তারা এ বিষয়ে এ প্রতিবেদকে জানায় বড়দল ইউনিয়ন এর গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের আনিছ গাজীর বাড়ীর সামনে একই গ্রামের মৃত ওমর আলী গাজীর নারী লোভী লম্পট পুত্র আব্দুল খালেক গাজী (৪২) মটর সাইকেলের গ্যারেজ রয়েছে। সেই সুত্র ধরে আনিছ গাজীর বাড়ীতে সময় অসময় যাতায়াত করত। এক পর্যায়ে আনিছ গাজীর স্ত্রী এক সন্তানের জননী সালমা খাতুন (৩৭) এর দিকে তার কু-নজর যায়। এরপর লম্পট গৃহবধু সালমা খাতুনের স্বামী আনিছ যখন জীবন জীবিকার তাগিদে রাজমিস্ত্রীর কাজে মুন্সিগঞ্জ জেলায় অবস্থান করছিল। এ সুযোগে প্রায়ই সময় বাড়ী হইতে ভিকটিম সালমা খাতুন বাজার ঘাটে আসার পথে ও বাড়ীতে যাওয়ার সময় বিভিন্ন ভাবে উৎত্যাক্ত করা সহ কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল।

এ বিষয়টি স্ত্রী সালমা খাতুন মুঠোফোনে তার স্বামীকে জানানোর পর তার স্বামী আনিছ গাজী বাড়ীতে এসে স্ত্রীর কাছে আরও বিস্তারিত শোনা বোঝার পর এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ উত্যাক্তকারী খালেক এর পরিবার সহ তার আত্মীয় স্বজনদেরকে এ ঘটনার বিষয়ে জানান তারা কোন প্রতিকার না করায় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে এ বিষয়ে জানাইলে তারা খালেক সহ তার পরিবারকে আর এ ঘটনা নিয়ে সামনের দিকে না আগানোর জন্য কড়া ভাষায় নিষেধ করে দেয়।

এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তির কথামত কিছুদিন বিরত থাকার পর আবারও সুযোগ বুঝে নারী লোভী লম্পট খালেক গাজী পুনরায় কু-প্রস্তাব দেওয়ায় গৃহবধু রাজী না হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ লম্পটকে গালিগালাজ করে। এতে ঐ লম্পট খালেক গাজী ব্যার্থ হয়ে বলে আমি যখন তোর দিকে নজর দিয়েছি আমি তোকে ভোগ করব। আমার হাত থেকে তোকে আর কেউ রক্ষা করতে পারবে না আমি যা বলছি তাহা মেনে নাও নাই এমন অবস্থা করব লোক সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না বলে হুমকি দেয়। এতে ভিকটিম ভয় না পেয়ে এ প্রস্তাব অস্বীকার করে। এতে ঐ নারী লোভী লম্পট রাগে ক্ষোভে ও তার পরিবারের কাছে নালিশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।

এক পর্যায়ে গৃহবধুর স্বামী বাড়ীতে না থাকার সুযোগে ঘটনার দিন রাতে লম্পট খালেক গাজী আনিছের বাড়ীর পিছনের দিক দিয়ে ঐ বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া পূর্ব হতে ওৎ পেতে ছিল। ঘটনার দিন প্রতিদিনের ন্যায় ভিকটিমের পুত্র প্রাইভেট পড়তে যায়। ছেলে বাড়ীতে আসার অপেক্ষায় ভিকটিম সালমা খাতুন ঘরের খাটের উপরে শুয়ে টিভি দেখছিল। পরে দরজা খুলে বাথরুমে আসলে ঐ লম্পট চুপিচাপে ঘরে প্রবেশ করে ঘরের এককোনে লুকিয়ে ছিল। স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা বলে ভিকটিম বাথরুম সেরে যখন ঘরে প্রবেশ করে শোয়ার কক্ষে খাটের উপর শুয়ে ছেলে বাড়ী আসার অপেক্ষায় টিভি ছেড়ে দিয়ে দেখছিল হঠাৎ খাটের নিচ হইতে খালেক বের হয়ে গৃহবধুকে জাপটে ধরে ধর্ষনের চেষ্টা করে। তার হাত হইতে বাচার জন্য ভিকটিম চিৎকার চেচামেচি করতে থাকলে ধর্ষনের চেষ্টাকারী খুন করার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মুখ চেপে ধরে।

একপর্যায়ে ভিকটিম যে কোন ভাবে নিজেকে বাচিয়ে নিয়ে তাকে ঘরে আটকিয়ে বাহির হইতে শিকল দিয়ে রাখে। এরপর চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন এ খবর পেয়ে লম্পট খালেক গাজীর পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে রক্ষা করতে তার ভাই আব্দুল হান্নান গাজী (৩৭) আব্দুল হামিদ (৪৬) লোকজন নিয়ে ঐ বাড়ীতে এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে ভিকটিম বাঁধা প্রদান করায় তাকে বেপোরোয়া মারপিট করে গুরুতর আহত করে।

এ সময় আশপাশের লোকজন উপস্থিত হলেও তাদের হিংস্র মনোভাব দেখে কেউ ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি কেউ। ফলে ধর্ষনের চেষ্টাকারী লম্পট খালেকে তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে ও মামলা মোকদ্দমা না করার জীবন নাশের হুমকী দিয়ে চলে যায়। এরপর আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আহত গৃহবধু সালমা খাতুনকে আশাশুনি সাংবাদিক উদ্ধার করে আশাশুনি হাসপাতালে ভর্তি করে।

আহত গৃহবধু সালমা একটু সুস্থ হওয়ার পর তার স্বামীসহ এলাকার গন্যমান্য বর্গের সাথে আলাপ আলোচনা করিয়া আহত গৃহবধু সালমা খাতুন বাদী হয়ে ২৪/০২/২০২২ ইং তারিখে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ২০০০সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (সংশোধিত-০৩) ৯(৪)(খ)/৩০ তৎসহ দন্ড বিধি ৩৭৯/৩২৩/৩০৭/৫০৬নং ধারায় মামলা দায়ের করে। মামলাটি বিজ্ঞ আদালতের বিচারক আমলে নিয়ে সিআইডি সাতক্ষীরাকে তদন্ত পূর্বক আদালতের প্রতিবেদন দাখিলের নিয়ে নির্দেশ প্রদান করেন। এ ঘটনায় সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক গ্রেফতার ও ন্যায় বিচারের দাবী জানীয়ে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভিক্টমসহ তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন