আশাশুনি প্রতিনিধি :
আশাশুনির বড়দলে স্কুল ৮ম শ্রেনীতে পড়–য়া স্কুল ছাত্রীকে অপহরন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সকালে এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের উত্তর বড়দল গ্রামে।
এ বিষয় ঘটনাস্থল ঘুরে ও থানায় লিখিত এজাহার সুত্রে জানাগেছে উত্তর বড়দল গ্রামের মনিরুল ইসলাম এর কন্যা বড়দল আফতাব উদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলে ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া কন্যাকে একই গ্রামের নুর ইসলাম (নুনু) এর বখাটে নারী লোভী লম্পট পুত্র ইয়াছিন (২৪) স্কুলে যাতায়াতের পথে তাকে প্রায় বেড় দিয়ে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছিল। এ প্রেম প্রস্তাবে স্কুল ছাত্রী প্রত্যাখ্যান করে তাকে বলে বেশি জালাতন করলে বিষয়টি সকলকে বলে দেব।
এতে এক তরফা প্রেম প্রস্তাব নিবেদনকারী লম্পট ইয়াছিন চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে একপর্যায়ে বলে আমার সাথে ছাড়া তোমার অন্য কারও সাথে বিয়ে হতে দিব না। প্রয়োজন বোধে অপহরন পূর্বক আমার এই প্রেম ভালবাসা জয় করতে বিয়েতে বাধ্য করবে বলে হুমকি প্রদান করে।
একপর্যায়ে স্কুলের যাওয়া ও আসার পথে উৎত্যাক্ত করতে থাকে। এ বিষয়টি স্কুল ছাত্রী তার পিতা মাতাকে জানাইলে মেয়ের পিতা ছেলের গার্জিয়ানদের কাছে এ ঘটনার বিষয় জানাইলে তারা বলে এ রকম আর হবে না তুমি বাড়ীতে যাও। কিন্তু এর পরেও ছেলের পরিবার কোন রকম তাদের ছেলেকে কিছুই না বলে এ কর্মকান্ডে সহযোগীতা দিয়েছেন। ফলে ঘটনার দিন সকালে স্কুল ছাত্রীর পিতা মনিরুল ইসলাম (৪৫) তার ছোট কন্যাকে দাদীর কাছে বাড়ীতে রেখে গর্ভবতী বড় কন্যাকে সিজার করার জন্য সাতক্ষীরা ফারজানা ক্লিনিকে ভর্তি করিয়া স্বামী স্ত্রী সহ তাদের ছেলেকে নিয়ে সেখানে রাতে থেকে যান।
এ সুযোগে প্রেম নিবেদনকারী, নারী লোভী লম্পট ইয়াছিন ও তার সহযোগী সহোদর ভাই সহ ৪/৫ জন মটর সাইকেল যোগে মনিরুল ইসলামের বাড়ীর সামনে যায়। সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা বিভিন্ন পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করতে থাকে। একপর্যায়ে স্কুল ছাত্রীকে তার বাড়ীর পাশের্^ একটি ছেলেকে দিয়ে বাড়ীর বাহিরে ডেকে এনে ঐ লম্পট ইয়াছিন বলে তোমার সাথে এতদিন যা করেছি তা ভুল হয়েছে। আর এ রকম হবে না, আর কারও সাথে নালিশ করো না বলে কথা বলতে বলতে অন্যান্যরা পিছন দিক থেকে সাদা কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ধরে পাজা কোলা করে মটর সাইকেলে তুলে অপহরন করে নিয়ে যায়।
এ সময় মেয়ের দাদী খবর পেয়ে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে এবং বলতে থাকে আমার পুত্নিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তোমরা কে কোথায় আছো বাঁচাও এ শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন মটর সাইকের ধরা করলেও আটক করতে পারিনি। এ ব্যাপারে স্কুল ছাত্রীর পিতা মনিরুল ইসলাম সরদার বাদী হয়ে ইয়াছিনকে প্রধান আসামী করে ৪জনের নাম উল্লেখ পূর্বক আও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে আশাশুনি থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করে। মামলা না করার জন্য স্কুল ছাত্রীর অভিভাবকে হুমকী দেওয়ায় পরিবারটি চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে।
এব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমিনুল ইসলাম পিপিএম এর কাছে জানতে চাহিলে তিনি এ প্রতিবেদকে জানান স্কুল ছাত্রী অপহরনের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন অপরাধী অপরাধ করে পার পায়নি এরাও পাবে না।
এ বিষয় অপহরন হওয়া স্কুল ছাত্রীর পিতা মনিরুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান তার মেধাবী ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া কন্যাকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় তার পরিবারের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মেয়ে ছোট বিধায় আমি এ বিয়েতে রাজী না হওয়ায় পরিবার, বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের সহযোগীতায় তার কন্যাকে অপহরন করা হয়েছে তিনি তার কন্যাকে উদ্ধার পূর্বক পিতা মাতার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থ গ্রহন পূর্বক ন্যায় বিচার দাবী করেছেন।
ছেলের পিতা নুর ইসলাম এর কাছে জানতে চাহিলে তিনি বলেন তার ছেলের সাথে মনিরুল ইসলামের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে শুনেছি। তারা বাড়ী ছেড়ে কোথায় গিয়েছে তা আমি বলতে পারব না। তাদের মেয়েকে কেউ অপহরনে করেনি এ অভিযোগ মিথ্যা। অপহরনের ঘটনার তদন্তে এস,আই মিঠুন ও এএসআই সাইল সহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা প্রস্তুতি চলছিল। অপহরনকারীরা এখনও গ্রেফতার হয়নি, উদ্ধার হয়নি স্কুল ছাত্রী। পুলিশ বলছে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা সহ অপহরনকারীদের গ্রেফতারে থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।