হোম আন্তর্জাতিক আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালানোর পর সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের হামলা

আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালানোর পর সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের হামলা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 24 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সিরিয়ার স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র।

জানা গেছে, সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ৭৫টি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় রোববার এসব হামলা চালানো হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আইএসের শীর্ষ নেতা, সহযোগী এবং বিভিন্ন ক্যাম্প লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, বি-৫২, এফ-১৫ এবং এ-১০ সহ একাধিক মার্কিন বিমান ৭৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।

অন্যদিকে , সিরিয়ায় সন্দেহভাজন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ এবং দূরপাল্লার রকেটে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ছাড়া সিরিয়ায় সরকারহীনতার সুযোগ নিয়ে গোলান মালভূমি দখল করে নিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও ডয়চে ভেলে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেছেন, তারা সিরিয়ায় সন্দেহভাজন রাসায়নিক অস্ত্রের স্থাপনা এবং দূরপাল্লার রকেটগুলোতে হামলা করেছে যাতে সেগুলো শত্রুদের হাতে না পড়ে।

তিনি আরো বলেছেন, আমাদের একমাত্র স্বার্থ হচ্ছে ইসরায়েল এবং ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তা। তাই আমরা সেইসব কৌশলগত অস্ত্র ব্যবস্থায় আক্রমণ করেছি, যেমন— অবশিষ্ট রাসায়নিক অস্ত্র বা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট, যাতে সেগুলো চরমপন্থিদের হাতে না পড়ে।

প্রসঙ্গত, দেশটিতে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অভিযানের মুখে ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বাশার আল-আসাদ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমেই সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনামলের অবসান হলো।

২০০০ সালের জুলাই মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বাশার আল-আসাদ। একই সময়ে তিনি বাথ পার্টির নেতা ও সামরিক বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বও নেন। তবে তার শাসনের এক দশক পর অর্থাৎ ২০১১ সালে সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে নামলে তিনি কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেন।

২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধকে ঘিরে বাশার আল-আসাদের সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। তিনি ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। সম্ভবত তার আশংকা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পরবর্তী টার্গেট সিরিয়া হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র সেসময় ইরাকে তাদের বিরোধীদের কাছে অস্ত্র চোরাচালানে সহায়তার জন্য দামেস্ককে দায়ী করছিল। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ২০০৫ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি বৈরুতে বিস্ফোরণে নিহত হলে এ ঘটনার জন্য অনেকে সিরিয়া ও তার সহযোগীদেরই দায়ী করে।

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। ক্রেমলিনের সূত্র উল্লেখ করে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবরে বলা হয়েছে, মানবিক দিক বিবেচনা করে আসাদ ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে রাশিয়া।

ক্রেমলিনের একটি সূত্র বলেছে, রাশিয়া সবসময় সিরিয়ার সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে ছিল। আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আলোচনার পুনরারম্ভের জন্য জোর দিচ্ছি।

তাসের খবরে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়ার কর্মকর্তারা সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন