হোম অন্যান্য আলিফ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে না: গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি

আলিফ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে না: গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 14 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে মামলা দায়ের, তদন্ত কোনোটিই সঠিক পথে এগোচ্ছে না এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগের মতোই সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি বলেন, মামলা দায়ের ও তদন্ত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। মামলাগুলোতে গণহারে আসামি করা ও তদন্ত পরিচালনা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করে আমাদের মনে হয়নি যে, এই হত্যার সঠিক বিচারের প্রশ্নে এর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বিভাগ আন্তরিক। আমরা চট্টগ্রামে পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরার পরে স্থানীয় থানার একজন এসআই সেবক পল্লীতে গিয়ে হরিজনদের হুমকি দিয়ে এসেছেন এবং বলেছেন যে, তারা যদি প্রকৃত অপরাধীদের ধরিয়ে দেয়— তবে যে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন তিনি। হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষজনও গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, হরিজনদের মধ্যে কেউ যদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে, যদি সেটা তদন্তে প্রমাণিত হয়— তাহলে তাদের বিচার হতে হবে। কিন্তু যেভাবে গোটা সেবক কলোনিকেই হত্যাকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে, সেবক কলোনি উচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, কোর্ট বিল্ডিংয়ে চাকরিরত সেবকদের (হরিজনদের) ছাটাই করা হচ্ছে, সিটি করপোরেশনের বাইরে যারা বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, তাদেরও একই অজুহাতে ছাটাই করা হচ্ছে— সেটা গোটা সম্প্রদায়কেই হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।

এ সময় তিনি ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি জানান, আইনজীবী আলিফ হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষীদের ফায়দা লুটতে দেওয়া চলবে না। কোর্ট প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ভাঙচুরের ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। এই ঘটনায় উসকানিদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি আরও জানান, হরিজনদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করতে হবে। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজগুলো পরীক্ষা করতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। গণগ্রেফতার ও গ্রেফতার বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সব অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তির বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা ও তাদের আইনজীবীরা যাতে আদালতে জামিনের আবেদনসহ সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নির্বিঘ্নে নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন তিনি।

আলিফ হত্যাকান্ডের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, কিছু গোষ্ঠী স্বার্থ বা পরিস্থিতি তৈরির কিছু সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। অজ্ঞাতনামা আড়াই হাজার ব্যক্তির নামে মামলা দেওয়া হয়েছে, ব্যাপক হয়রানি চলছে। পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য, হয়রানি এখনো চলছে। এতে সাম্প্রদায়িক একটা দিকও আছে। এর পেছনে একটা গোষ্ঠী আছে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির ডা. হারুনুর রশীদ, সীমা দত্ত প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন