নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন নিয়ে দু’ গ্রæপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বধিহাটা ইউনিয়নের বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। সম্মেলনস্থলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ইয়াছির আরাফাত পলাশ, যুবদলের বকুল, শরিফুল, আশিক, কল্লোল, দীপু, রমজান আলী, মনিরুল, আজমিনুর, হাশেম আলী, মিঠু আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ইয়াছির আরাফাত পলাশকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, আশাশুনি উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে টানা কয়েকদিন ধরেই উপজেলা ব্যাপী বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় জানান, বুধহাটা ইউনিয়ন বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে বিএনপির দুই গ্রুপের উত্তেজনা বিরাজ করায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ১৪৪ জারি করার পরও সেখানে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিএনপির দুই গ্রুপের হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনার খবর শুনে সেখানে তিনিসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে সকলকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয় এবং সেখানে মাংকিং করে সকল প্রকার সভা সমাবেশ বন্ধসহ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়। তিনি আরো জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির এক অংশের (জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক শেখ তারিকুল হাসান গ্রæপ) আহবায়ক আসিফুর রহমান তুহিন ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন বাচ্চু জানান, প্রশাসনের দেয়া ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে তারা ত্যাগী নেতাদের বাদ রেখে গোপনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করলে আমরা সেটা বন্ধ রাখার জন্য তাদেরকে অনুরাধ জানাই। কিন্তু তারা সেটি না করে গায়ের জোরে সম্মেলন করার চেষ্টা করে এবং আমাদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের রক্তাক্ত জখম করে। এরপর আমাদের ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন। তারা এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ও উর্দ্ধতন নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সাথে সাথে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান হবিকে দায়িত্ব থেকে অপসারন ও আগামীতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সম্মেলন আহবান করা হলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
সম্মেলনের পক্ষে উপজেলা বিএনপির অপর গ্রæপের (জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ ইফতেখার গ্রুপ) সদস্য সচিব মশিউল হুদা তুহিন ও যুবদল সদস্য সচিব আবু জাহিদ সোহাগ জানান, বুধহাটা ইউনিয় কমিটির সম্মেলনের জন্য পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০ টা থেকে আমরা ভোট গ্রহন করছিলাম। প্রতিপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে রড, লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে হামলা করে সম্মেলন পন্ড করে দেয়ার চেষ্টা করে। এসময় আমাদের নেতা-কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এরপর আমরা পুনরায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শুরু করলেও পরে প্রশাসন সেখানে এসে সম্মেলন পন্ড করে দেন।