জাতীয় ডেস্ক:
আবারও তীব্র লোডশেডিংয়ে নাজেহাল ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ। অন্যদিকে ছোট-বড় সব ধরনের মিল-কারাখানায় ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। ফলে লোকসানের পাশাপাশি ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছেন কারখানা মালিকরা। এ অবস্থায় অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধেরও শঙ্কায় রয়েছেন।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা সংকট কেটে যাওয়ার পর উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ দু-সপ্তাহ ধরে আবারও তীব্র লোডশেডিংয়ের কবলে জনজীবন। দফায় দফায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় নাজেহাল মানুষ।
বিদ্যুৎ না থাকার কারণে, বিশেষ করে ছোট-বড়সহ সব ধরনের মিল-কারাখানায় ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। বেশির ভাগ সময়ই অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা। ফলে ব্যবসায়ীদের সময়মতো মালামাল সরবরাহ করতে না পারায় লোকসানের পাশাপাশি ঋণের বোঝা ভারী হচ্ছে কারখানা মালিকদের।
এ অবস্থায় কেউ কেউ জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন সচল রাখার চেষ্টা করলেও খরচ বেড়ে যাওয়ায় তা কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। আর সে কারণে একান্ত প্রয়োজনীয় শ্রমিক ছাড়া বাকিদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। অনেকে আবার প্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কায় রয়েছেন। তবে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতি, বলছে নেসকো কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করে জানান, গত মাসেও লোডশেডিং ছিল কম। কয়েক সপ্তাহ ধরে মাত্রা বেড়েছে। কোনো কাজ ঠিকমতো করা যাচ্ছে না। নষ্ট হচ্ছে মেশিন ও কম্পিউটারের মালামালসহ ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মালামাল সরবরাহে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ঋণের চাপ বাড়ছে।
ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক নুরুল হক বলেন, এর আগেও সরকারের প্রতি অনুরোধ রাখা হয়েছে যাতে অন্তত ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। মাঝে ঠিক হয়েছিল কিন্তু বর্তমানে আবারও তীব্র লোডশেডিং শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আবারও অনুরোধ করব।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ (নেসকোর) নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম বলেই এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই সমাধান হবে।
বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ নেসকো তথ্যমতে, স্বাভাবিকভাবে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও তীব্র গরমের কারণে বর্তমানে ১৮ মেগাওয়াট প্রয়োজন হচ্ছে। আর জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।