হোম আন্তর্জাতিক আফগানিস্তানে যেভাবে চলছে তালেবান শাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

আফগানিস্তানে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের দেশজুড়ে অপ্রতিরোধ্য পরাক্রমের মধ্যেই দেশটির বর্তমান সরকারের মনোনীত সেনাপ্রধান ওয়ালি মোহাম্মাদ আহমাদজাইকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

আফগানিস্তানে তালেবানের একের পর এক প্রদেশ দখলে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে সরকারি বাহিনী। এখন পর্যন্ত দেশটির ৬০ ভাগই বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তান ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে তালেবান সদস্যরা। বুধবারও নতুন করে তিনটি প্রদেশের দখল নেয় তারা।

শুধু তাই নয়, স্থানীয় সেনা সদর দপ্তরও এখন তাদের হাতের মুঠোয়। উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় বাদাখশান ও বাঘলানের প্রাদেশিক রাজধানী নিয়ন্ত্রণের পর চাপে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

তালেবান দমনে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে আফগান সরকার। এরই মধ্যে বালখ প্রদেশের অনেকটাই ঘিরে ফেলেছে তালেবান যোদ্ধারা। তবে তালেবান হটাতে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য অঞ্চলটি পরিদর্শন করেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

একজন ঊর্ধ্বতন তালেবান কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তারা পরিকল্পনা করেই অভিযান পরিচালনা করছেন। কারণ, এখানে তালেবানের প্রতিপক্ষ বরাবরই শক্তিশালী এবং এখানকার জনসংখ্যা পাঁচমিশালি।

তালেবানের মূল নেতৃত্বে থাকা বেশির ভাগ নেতাই পশতুন পাঠান জাতিগোষ্ঠীর। কিন্তু ওই কর্মকর্তা জানান, তারা এবার দেখাতে চান যে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর লোকও তাদের দলে রয়েছে।

বালখ্ প্রদেশের স্থানীয় তালেবান নেতা হাজি হেকমত বিবিসির কাছে দাবি করেন, তালেবানের শাসনে সেখানকার মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারা স্বাভাবিক রয়েছে। ছাত্রীরা দলে দলে স্কুলে যাচ্ছে (যদিও দেশের অন্যত্র মেয়েদের স্কুলে যেতে নিষেধাজ্ঞার কথা শোনা গেছে।) বাজারগুলো নারী ও পুরুষ খদ্দেরে গমগম করছে।

স্থানীয় সূত্র থেকে আগে জানা যায়, নারীরা শুধু পুরুষ সঙ্গী নিয়ে বাড়ির বাইরে যেতে পারেন। আফগানিস্তানের অন্য জায়গাগুলোতে তালেবান নেতারা নারীদের বের হওয়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তবে আমরা এখানে যাদের দেখেছি তারা সবাই ছিলেন বোরকা পরা। তাদের মুখ এবং হাত ছিল ঢাকা। হাজি হেকমত জোর দিয়ে বললেন, এদের কাউকেই কোনো জোর-জবরদস্তি করা হচ্ছে না এবং মেয়েদের কী পরিধান করা উচিত, তালেবান শুধু সে সম্পর্কেই ‘উপদেশ’ দিচ্ছে। ট্যাক্সিচালকদের প্রতি কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যেন কোনো বোরকাবিহীন ‘বেগানা’ নারীকে ট্যাক্সিতে না তোলেন।

উল্লেখ্য, পোশাকের কারণে ইতোমধ্যেই নারীদের হত্যার খবর এসেছে। তবে এসব ঘটনার সঙ্গে তালেবান সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ হাজি হেকমত অস্বীকার করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন