আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে হতাহতের সংখ্যা। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দেশটির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত অন্তত ৮০০ জন নিহত এবং দুহাজার ৮০০ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, পূর্বাঞ্চলীয় কুনার ও নানগারহার প্রদেশে মোট ৮১২ জন নিহত হয়েছেন। সীমান্তবর্তী দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে মাটির ঘরবাড়ি ধস এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উদ্ধারকাজ চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
রিখটার স্কেলে ছয় মাত্রার ভূমিকম্পটি মধ্যরাতে আঘাত হানে। আন্তর্জাতিক সহায়তার ঘাটতি এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে ফেরত পাঠানো শরণার্থীদের চাপে দেশটি ইতোমধ্যেই আর্থিক চাপে রয়েছে। এরমধ্যে ভূমিকম্পের আঘাতে তালেবান প্রশাসনের ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবদুল মাতেন কানাই বলেন, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা সব ক্ষেত্রেই পূর্ণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব ধরনের দল মোতায়েন করা হয়েছে।
রয়টার্স টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, হেলিকপ্টারে আহতদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা বাহিনী ও চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে মিলে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন।
রয়টার্সের প্রকাশ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আহতদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে নিতে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা করছেন স্থানীয়রা।
আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শারাফাত জামান বলেন, এখানে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেকে গৃহহীন হয়েছে। এখন আমাদের সহায়তা দরকার।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর এটি আফগানিস্তানের তৃতীয় ভয়াবহ ভূমিকম্প। মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর আন্তর্জাতিক তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকারি অর্থায়নে সংকট দেখা দেয়। এমনকি মানবিক সহায়তাও ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ২০২২ সালে ৩৮০ কোটি ডলার থেকে চলতি বছর কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭৬ দশমিক ৭ কোটি ডলার।
এর আগে ২০২২ সালে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।