অনরাইন ডেস্ক :
আতঙ্ক না ছড়িয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি দাফতরিক কাজও চালিয়ে যেতে বলেছেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনার দোহাই দিয়ে আমরা কাজ কমিয়ে দেব সেটি হবে না। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এটি প্রতিরোধে যা যা করার তা করতে হবে। আতঙ্ক ছড়ানো যাবে না। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে রক্ষা করা। সেজন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হবে। পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এমএ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সেলফ কোয়ারেন্টিন করতে হবে। এখন প্রযুক্তির সময়। তাই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক কাজই করা যায়। উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, সরকারি অফিস বন্ধ করা হবে না।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাবধানে থেকে কাজকর্ম করবেন। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাজও করব, সুরক্ষাও দেব- এই হল আমাদের নীতি। করোনার কারণে আমরা আমাদের কাজ থেকে পিছপা হব না। করোনা মোকাবেলা করব সামনে থেকে, কাজও পুরোপুরি আমরা করব।’ তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো মহল বলছে, আমরা যেন এ মুহূর্তে মিটিং-সিটিং কমিয়ে দিই।
হ্যাঁ, আমরা অপ্রয়োজনীয় মিটিং করব না। তবে একনেক সভা, কেবিনেট সভা করতেই হবে। এগুলো উনি (প্রধানমন্ত্রী) বন্ধ করবেন না। আর যদি ছোটখাটো কোনো সভা থাকে, আমি আমার দায়িত্বে বন্ধ করতে পারি।
লকডাউনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, লকডাউন করে পেনিক সৃষ্টি করার মতো পরিস্থিতি আমাদের হয়নি। আমাদের জনগণ সংখ্যায় বেশি। আমাদের জনগণ লকডাউনে অভ্যস্ত নয়। অনেক সুশৃঙ্খল দেশ আছে সরকার যা অর্ডার দেয়, নাগরিকরা তা মেনে নেয় বিনা প্রশ্নে।
সুতরাং সেসব দেশের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা ঠিক হবে না। (এখানে) লকডাউন নয়, পর্যায়ক্রমে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। করোনার অর্থনৈতিক প্রভাব প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অবশ্যই সার্বিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যেমন ধরুন, বাংলাদেশ বিমানের আয় কমে যাবে। রেলের আয় কমে যাচ্ছে, বাসের আয় কমে যাচ্ছে, স্কুলের আয় কমে যাচ্ছে। কোথায় না কমছে। এর প্রভাব আমাদের জাতীয় আয়ের ওপর পড়বে।
এমএ মান্নান বলেন, আপনি ভাগ্যবান যে একটা কৃষি পর্যায়ের দেশে বাস করছেন। কুমিল্লা, বগুড়া থেকে সবজি চলে আসবে। আমরা তো মা-চাচিদের কাছ থেকে লাউ-কুমড়া এনে দু-বেলা খেতে পারব। অনেক দেশ আছে, রাত পোহালেই বিমানের অপেক্ষায় থাকতে হয়।
প্রতিদিন সকালে সবজি, দুধ, মাখন, পাউরুটি নিয়ে বিমান নামে সুইজারল্যান্ডে। তাদের তো এগুলো নেই। তাদের তো পানি আসে বাইরে থেকে, এমন দেশও আছে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব উৎপাদন আছে অনেক পণ্য।
মন্ত্রী বলেন, বিভাগীয় শহরে করোনার পরীক্ষার সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
সূত্র জানায়, হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে থাকা নিয়ে বিদেশ থেকে যেসব ব্যক্তি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তাদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এখন যারা বিদেশ থেকে আসছেন তারা যে শুধু নিজের সমস্যা করছেন তা নয়, বরং পুরো কমিউনিটির সমস্যা করছেন। সাধারণভাবেই তাদের সেখানে (কোয়ারেন্টিন) থাকতে হবে। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পরিশ্রম আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সূত্র জানায়, এর আগে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা একটি সিল বানিয়েছি। যারা বিদেশ থেকে আসবেন এবং কোয়ারেন্টিনে থাকবেন বা যাদের কোয়ারেন্টিনে থাকা প্রয়োজন তাদের হাতে সিলটি দেয়া হবে। ভোট দেয়ার মতো কালি ব্যবহার করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা এমন কিছু করছি যাতে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে।