অনলাইন ডেস্ক:
‘আজকে রাজপথে যে সমাবেশ, মিছিল তা কারও বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলার জন্য নয়, আজকের মিছিল দেশের স্বার্থরক্ষার মিছিল।’ সাত নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠেয় বিএনপির র্যালি উদ্বোধন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে আড়ম্বরপূর্ণ র্যালি শুরু হওয়ার আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের সাত নভেম্বর ছিল বাংলাদেশের শত্রু মিত্র চেনার দিন। ২০২৪ সালের সাত নভেম্বর শত্রু চিহ্নিত করার দিন।’
এদিন দুপুর ১২টা থেকে নয়া পল্টনে নেতাকর্মীরা জড়ো হন। মিছিলে মিছিলে মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে র্যালিতে যোগ দিচ্ছেন বিএনপির অনুসারীরা। র্যালিতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তারেক রহমান বলেন, ‘আগেও বলেছি বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে আর কেউ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে পারবে না। রাজধানী ঢাকার এই রাজপথে লাখো জনতার এই মিছিল বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে সাতই নভেম্বরের অন্তর্নিহিত শিক্ষায় দীক্ষিত করার মিছিল।’
‘লাখো জনতার আজকের এই মিছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আহত অসংখ্য ছাত্র-জনতা এবং হাজারো শহীদের স্বপ্নে একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের মিছিল।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী অপশক্তি জেনে রাখুক, রাজধানীর রাজপথের আজকের এই সমাবেশ-মিছিল কারও বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলার জন্য নয়, বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষার মিছিল, নিজের অধিকার রক্ষার মিছিল, নিজের ভোট প্রয়োগের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল।’
‘আমি নিজেও সতর্ক’
তারেক রহমান যোগ করেন—‘কখনও যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে সেজন্য প্রতিটি নাগরিকের ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার থেকে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জনগণের ভোটের প্রতি যতক্ষণ পর্যন্ত মুখাপেক্ষী করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত জনগণ গণতন্ত্রের সুফল পাবে না।’
‘এমনকি স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশেও স্বল্প আয়ের মানুষকে বাজার সিন্ডিকেটের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়বে, যদি না মানুষের সরাসরি ভোটের অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পারি।’
‘স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের’ উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি একটি বিষয়ে স্মরণ করিয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানাতে চাই, আমি নিজেও সতর্ক থাকতে চাই, সেটি হলো গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র এখনও কিন্তু থেমে নেই। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা দেশে-বিদেশে, প্রশাসনে এখনও সক্রিয়।’
‘এই অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তবে নিজেদের সতর্ক করতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এটিই আজ জনগণের চাওয়া।’
‘লক্ষ জনতার এই মিছিল কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।’ এই প্রত্যাশা ও সাফল্য কামনা করে র্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন তারেক রহমান।
এসময় অস্থায়ী মঞ্চে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর মির্জা ফখরুলসহ মঞ্চে থাকা নেতারা তাকে সালাম দেন। এরপর র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি জাতীয় সংসদের দক্ষিণ গেট এলাকায় শেষ হওয়ার কথা।