হোম অন্যান্যসারাদেশ ‘আগুনের বদলা আগুন চাই’

‘আগুনের বদলা আগুন চাই’

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 119 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:

‘আমার মেয়ের কী অপরাধ ছিল? কেন তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারলো? আমি আগুনের বদলা আগুন চাই।’

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে হরতাল সমর্থকদের দেয়া আগুনে নিহত নাদিরা আক্তার পপির মা জ্যোৎস্না আক্তার মেয়ের অকাল মৃত্যুতে এভাবেই আহাজারি করছেন আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।

সবাইকে নিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করবে বলে ৩ ডিসেম্বর দুই শিশু পুত্রকে নিয়ে বাবার বাড়ি এসেছিলেন নাদিরা আক্তার পপি। নিরাপদ ভেবে ট্রেনে ফিরছিলেন স্বামীর কাছে। এটিই কাল হলো তার জীবনে। ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে তিন বছর বয়সী ছেলে ইয়াসিনকে বুকে নিয়ে পুড়ে অঙ্গার হলেন পপি।

এই খবরে নেত্রকোনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের বরুণা গ্রামে চলছে শোকের মাতম। মা বোনেরা স্বজন হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। এমন হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন শোক সন্তপ্ত পরিবারের স্বজনসহ এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিহতের বাড়ি ঘরে কান্নার রোল পড়েছে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে দেখতে। পাড়া প্রতিবেশীরাও শোকে বিহবল। সকাল থেকে প্রিয় জনের মৃত্যুর খবরে যেন কান্না থামছেই না।

ছোট বোন কামরুন্নাহার রুনা বোন আর ভাগ্নের ছবি দেখে দেখে আহাজারিতে ভারি করে তুলেছে চারপাশ। মা জোসনা আক্তার বার বার নাতি কন্যার শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন।

৫ বোনের মধ্যে নাদিরা দ্বিতীয়। পাশের বরুনা গ্রামের মিজানুর রহমানের সঙ্গে প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে হয় তার। মিজান ঢাকার কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়্যার ব্যবসা করেন ১৮ বছর ধরে। এরপর বিয়ে করে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যান। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে ৯ বছর বয়সী এবং নিহত ইয়াসিনের বয়স ৩। তারা সবাই ঢাকায় থাকতো।

গত ৩ ডিসেম্বর গ্রামের বাড়িতে আসেন পপি। বেড়ানো শেষে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতের ১২ টায় ট্রেনে ওঠেন। ছোট ভাই হাবিবুর রহমানও সঙ্গে যায়। কিন্তু দুর্বৃত্তদের আগুনে ট্রেনে থাকা ইয়াসিন ও পপি পুড়ে যান। ছোট ভাই বড় ছেলেকে নিয়ে ট্রেন থেকে ঝাপ দিয়ে বেঁচে যান।

নিহতের স্বজন এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার বিচার চেয়েছেন।

তারা জানান, ট্রেনকে নিরাপদ ভেবে চলাচল করেও অনিরাপদ ভাবে মরতে হলো। এই দায় থেকে বাঁচতে সরকারকে হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করতে হবে।

মিজানুরের বড় ভাই আব্দুল কাদির মিলন বলেন, তারা তিন ভাই। মেঝোটা ঢাকার কারওয়ান বাজারে কিচেন মার্কেটে ব্যবসা করে। ছুটিতে এসেছিল তার স্ত্রী বাচ্চারা। আমার বাসা শহরের কুড়পাড় এলাকায়। সেখানে গেলে আমি নিজে উঠিয়ে দিয়েছি ট্রেনে। আমার ভাইয়ের এসে নামিয়ে নেয়ার কথা ছিল। আর পারলো না।

চাচা অবসরপ্রাপ্ত বিবিজি এরশাদ আলী বলেন, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন