হোম রাজনীতি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত মজলিস

আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত মজলিস

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 39 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ৩০০ আসনে রিকশা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে দলটির।
রোববার (২৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক এ ঘোষণা দেন।

ব্রিফিংয়ে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ পতিত হয়েছে এবং ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে যারা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস তাদের অন্যতম। আমাদের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। ফ্যাসিবাদী রেজিমের প্রধান শেখ হাসিনা আমাদের সংগঠন ও নেতৃত্বকে সরাসরি টার্গেট করেছিলেন।

ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজপথে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক ঐক্যকে নস্যাৎ করা যাবে না। বর্তমানে যে রাজনৈতিক সমন্বয়ের ধারা চলছে-যেখানে কেউ কাউকে উৎখাত করছে না, দমন করছে না-এটা যেন বজায় থাকে। কেউ যদি আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যে ফিরে গিয়ে দমন-উৎখাতের রাজনীতি করে, তাহলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবে এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, বাংলাদেশের ভিতর থেকেই বাংলাদেশের মানুষের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে-এটা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র যেন আর ফিরে না আসে, সে বিষয়ে আমাদের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ইসলাম ও দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্বাচনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে ৩০০ আসনেই রিকশা প্রতীকে নির্বাচন করবে। আবার যদি বৃহত্তর জোট বা নির্বাচনী সমঝোতার মাধ্যমে ইসলাম ও দেশের স্বার্থ অধিকতর রক্ষা হয়-সেদিকেও দল পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মামুনুল বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, নির্বাচনী কাঠামোর যেসব বিষয় এখনও অমীমাংসিত, তা দ্রুত জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে। সংসদের দ্বিকক্ষীয় কাঠামোর বিষয়ে ঐকমত্য থাকলেও, উচ্চ কক্ষ ও নিম্ন কক্ষ কিভাবে গঠিত হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

পিআর সিস্টেম সম্পর্কে খেলাফত মজলিসের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আংশিক পিআর সিস্টেম চাই। বর্তমান ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে না। তাই ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধি নির্বাচনে আংশিক পিআর সিস্টেম নিম্নকক্ষে ও পূর্ণ পিআর সিস্টেম উচ্চকক্ষে চালু করা প্রয়োজন।

খেলাফত মজলিসের এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বিশ্বাস করে, দেশের স্বার্থে একটি শক্তিশালী ও গঠনমূলক বিরোধী দল থাকা প্রয়োজন। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না ইনশাআল্লাহ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঐতিহ্যগতভাবে ইসলামী ঐক্যকামী শক্তি। প্রতিষ্ঠার পরপরই দল বৃহত্তর ইসলামী জোট গঠন করেছিল। আজও আমরা সেই ঐতিহ্য ধারণ করি।

স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনও হতে হবে জাতীয় রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের অভিভাবক পরিষদের সদস্য মাওলানা আকরাম আলী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা আলী উসমান, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, মাওলানা শরিফ সাইদুর রহমান প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতারা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন