হোম রাজনীতি আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির আসন বণ্টনের ধোঁয়াশা কাটছেই না

রাজনীতি ডেস্ক:

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুটি আসন ফাঁকা রেখে প্রথমে ২৯৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। পরে শরিক দলের জন্য আরও ছয়টি আসন ছাড়ার ঘোণা দেয় দলটি। এদিকে চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নেতৃত্বে নির্বাচনে ২৮৯ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোট নিয়ে সমঝোতার গুঞ্জন উঠেছে। ২৬টি আসন ছাড়ের কথা শোনা গেলেও দুদলেরই দাবি, জোট নয়, নির্বাচনের কৌশল নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

জাতীয় পার্টির দাবি, কোনো আসনেই প্রার্থী প্রত্যাহার করা হবে না। মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে সরকার গঠন করবে দলটি। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরাও জানান, আসন নয় কথাবার্তা হচ্ছে কৌশলগত বিষয়ে। তবে এখনও সমঝোতার পথ উন্মুক্ত আছে।

ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচনে যাচ্ছে, নাকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে জোটগতভাবে নির্বাচনে যাচ্ছে তা এখনও দোলাচালে।

ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে শুধু আসন ভাগাভাগির মতো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি জাতীয় পার্টির। তবে ইউরোপীয় সংসদের মতো বিরোধী দল হলেও সিনিয়রদের জন্য আসন ছাড়ের ব্যাপারে আলোচনা করেছে দলটি।

সর্বশেষ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আযম। জাতীয় পার্টির পক্ষে ছিলেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

বৈঠকের বিষয়ে তাৎক্ষণিক দুদলই কিছু জানায়নি। তবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছিলেন, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। এ বিষয়ে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুদলের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে গণমাধ্যমে ব্রিফ করা হবে।

শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের চুন্নু বৈঠকের বিষয়ে খোলাসা করলেও এখনও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কিছু বলা হয়নি।

জোট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কৌশল নিয়ে আলোচনা চলছে দাবি করে জাপা মহাসচিব বলেন, চরম বিরোধী দল হলেও অনেক সময় আসনের জন্য ছাড় দেয়া হয়। সম্মানের জায়গা থেকে ছাড় চাওয়া হচ্ছে। আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহারের সব কৌশল তো সামনে আনা যায় না। তবে আগামীকাল আরও তথ্য খোলাসা করা হবে।

২৬ আসনের সমঝোতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চুন্নু বলেন, ‘যে সাংবাদিক সংখ্যাটা উল্লেখ করেছেন তার থেকে নিশ্চয়ই আমি সংখ্যাটা বেশি জানব। কিন্তু সেটা তো না। শুক্রবারের সভার সময় ভেতরে তো কোনো সাংবাদিক ছিলেন না। তবে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) আরও তথ্য খোলাসা করা হবে।’

নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে হুমকি দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে দলের মহাসচিব বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

নিজেও অনেকবার হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে চুন্নু বলেন, ‘আমার ফোনেও অনেক হুমকি আসে। আই ডোন্ট কেয়ার, কিন্তু জিডি করার প্রয়োজন বোধ করিনি। আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এ ভয়ে ভীত না।’

এর আগে নির্বাচন থেকে জাতীয় পার্টি সরে দাঁড়াতে পারে, আওয়ামী লীগ এমন শঙ্কা দেখছে বলে দাবি করেছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

১২ ডিসেম্বর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দফতরবিষয়ক উপকমিটির মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট করে, নাকি বাদ দিয়ে নির্বাচন করবে আওয়ামী লীগ, তার সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছেন, থাকবেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। এদিন থেকেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়ে চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন