মনিরামপুর (যশোর)প্রতিনিধি:
যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে ভুল সিজারিয়ান অপারেশনে আসমা বেগম (৩২) এর মৃত্যুর পর চিকিৎসাধীন থাকা শারমিন বেগম (২৬) নামের নারীরও মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোর আনুঃ ৫টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে মৃত শারমিন বেগমের পরিবার সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। উল্লেখ গত শুক্রবার দুপুর ২ টার সময় নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে ২ জন প্রসূতিকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন, ডা. মনজুরুল মোরশেদ। অপারেশনের পরে ওই দুই প্রসূতির প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ফলে অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দু’জনকেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে পাঠিয়ে দেয়। তারা হলেন, মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের বাবু মোল্লার স্ত্রী শারমিন বেগম (২৬) ও একই গ্রামের শফিকুলের স্ত্রী আসমা বেগম(৩২)। গত শুক্রবার সন্ধ্যা আনুঃ ৭ টার সময় আসমা বেগম নামের নারীর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়। অপর চিকিৎসাধীন থাকা শারমিন বেগমকে তার স্বজনরা ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। সেখানে রবিবার দিন ভোরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
মৃত শারমিন বেগমের স্বামী বাবু মোল্লা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ফাতেমা হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে শুক্রবার ভর্তি করেছিলাম ডাক্তারের ভুল অপারেশনে আমার স্ত্রীর শরীর থেকে অনেক রক্ত পড়তে থাকে। তারা আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে আমি ডাক্তারসহ ফাতেমা হাসপাতালের সকলের কঠোর শাস্তি চায়। উল্লেখ থাকে বিতর্কিত ওই নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটতেই থাকে। এমন একাধিক অভিযোগ থাকার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে নেওয়া হয়না কোন আইনগত পদক্ষেপ। ফলে অদৃশ্য এক ক্ষমতা বলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পার পেয়ে যায়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা ওই হাসপাতালটিতে রয়েছে রাঘববোয়ালদের কালো হাত যারা টাকার বিনিময়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা গুলো ধামাচাপা দিয়ে রয়েছে বহালতবিয়তে।
অন্যদিকে যশোর সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে নওয়াপাড়া বেসরকারি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে দীর্ঘদিন নিয়মিত কোন পরিদর্শন ও অভিযান পরিচালনা করার দৃশ্য অভয়নগরবাসীর চোখে পড়েনা। যে কারনে নওয়াপাড়া বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক গুলোতে অনিয়মে ভরপুর হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালের পরিচালক মনজুরুল মোরশেদের মুঠোফোনে বলেন, আমি ব্যস্ত আছি এবিষয়ে এখন কিছুই বলতে পারবো না। এবিষয়ে ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালের ম্যানেজার তরিকুল ইসলামের মোবাইল ঘটনার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে।
এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলিমুর রাজিব বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি এবিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এবিষয়ে যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে এইমাত্র জানলাম, এমন ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে দেখা হবে। বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম বিষয়ে জানতে চায়লে তিনি বলেন, আমার ঢাকাতে প্রোগ্রাম রয়েছে। রোজার আগেই অভয়নগরে ক্লিনিক হাসপাতালে অভিযান করা হবে