নিজস্ব প্রতিনিধি :
অবশেষে জামিন পেলেন বিপুল পরিমান ভেজাল দুধ ও জেলিসহ গ্রেপ্তারের পর ভ্রাম্যমান আদালতে ছয়মাসের সাজা প্রাপ্ত ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা হওয়া সাতক্ষীরার তালা দুগ্ধ উৎপাদনকারি সমবায় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঘোষ। তবে, তার বিরুদ্ধে আদালতকে প্রতারনা করে জামিন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করে ধার্য দিনের আগেই তিনি গত বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে অন্তবর্তীকালিন জামিন পেয়েছেন বলে জানা গেছে। সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের ফটক থেকে তাকে সংবর্ধনা সহকারে মোটর সাইকেল র্যালি করে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। প্রশান্ত ঘোষ তালা উপজেলার জেয়ালা নলতা গ্রামের কালিপদ ঘোষের ছেলে।
এর আগে গত, গত ৬ সেপ্টেম্বর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সাতক্ষীরার পরিচালক নাজমুল হাসান ও তালা উপজেলার স্যানিটারী ইনসপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক শরিফ আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশান্ত ঘোষের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২৫০ কেজি জেলি ও ১১২০ কেজি ভেজাল দুধসহ তাকে আটক করেন। পরে তাকে পাটকেলঘাটা সহকারি ভূমি কমিশনার ও ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক রুহুল কুদ্দুসের সামনে হাজির করা হলে প্রশান্ত ঘোষ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করায় তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ্বন্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদ্বন্ডাদেশ দেন।
এদিকে, সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভ্রাম্যমান আদালতের ১২/২২ নং মামলার বিরুদ্ধে অ্যাড. অনিত কুমার মুখার্জী তার মোয়াক্কেল প্রশান্ত ঘোষের পক্ষে গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ আদালতে ১৭/২২ নং আপিল মামলা করেন। এরপর গত ২ অক্টোবর আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে নথি তলবের জন্য গত ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ওই দিন জামিনের আবেদন করলে বিচারক রেজা রশিদ আস্মাী প্রশান্ত কুমার ঘোষকে পরবর্তী ধার্য দিন ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে অন্তবর্তীকালিন জামিন দেন।
সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২ অক্টোবরের জামিন বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে একই সেরেস্তার আইনজীবী অ্যাড. আলমগীর আলম বাপ্পি গত ১২ অক্টোবর এ আদালতে ১২৮৯ নং মিস কেস দাখিল করেন। আদালত শুনানীর জন্য ১৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাড. প্রবীর কুমার মুখার্জী বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের একটি জামিন বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস কেস করে শুনানীর জন্য ধার্য দিনের বিষয়টি গোপন রেখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামিন নেওয়া আদালত প্রতারণার শামিল। আইন অনুযায়ি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামিন শুনানীর আগেই মিস কেসের আবেদন প্রত্যাহার করতে হবে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামীর পক্ষে ওকালতনামায় সাক্ষরকারি আইনজীবী যথাক্রমে অ্যাড. অনিত কুমার মুখার্জী ও অ্যাড. আলমগীর আলম বাপ্পি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে গত বৃহষ্পতিবার প্রশান্ত ঘোষের জামিন পাওআর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিসকেস শুনানীর দিনে আবেদন প্রত্যাহার করা হবে।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিসকেস শুনানীকালে উপস্থাপন করা হবে।