জাতীয় ডেস্ক:
বিভিন্ন অপহরণ চক্রের সঙ্গে গাড়ি চালকদের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
উত্তরা থেকে শেরপুর যাওয়ার পথে অপহরণ হওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, অপহরণের ঘটনায় তদন্তে নেমে ডিবি জানতে পেরেছে এ অপহরণের মূল পরিকল্পনায় ছিলেন তারই গাড়িচালক সামিদুল ইসলাম। এমনকি বিভিন্ন অপহরণ চক্রের সঙ্গে গাড়ি চালকদের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে ডিবি লালবাগ বিভাগ।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, সামিদুল ইসলাম যখন গাড়ি চালাতেন তখন তার ভেতরে লোভ জাগে হিমেলের মতো একটি গাড়ি কেনার। কারণ মায়ের একমাত্র সন্তান হিমেলের অনেক টাকা। তার বাবা মারা গেছেন। হিমেলের টাকা তারও হবে এই ভাবনা থেকে অপহরণের পরিকল্পনা শুরু হয়।
তিনি জানান, অপহরণের ব্যাপারে সামিদুল প্রথমে তুরাগ থানা এলাকার হানিফ নামে একজনের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে আলোচনা হয় ময়মনসিংহের দোবাউরা থানার ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের সঙ্গে। হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় নেয়া হয়। কিন্তু টাকা পেতে দেরি হওয়ায় মামুনের গাড়ি দিয়ে বর্ডার এলাকায় হিমেলকে পাঠানো হয়। গাড়িতে করে হিমেলকে বর্ডারের একটি পাহাড়ে নেয়া হয়। তখন থেকেই হিমেলের ওপর নির্যাতন শুরু হয়।
ডিবির হারুন জানান, গ্রেফতারকৃতরা অপহরণের পর ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করত। আর সেই ছবি ও ভিডিও হিমেলের মার কাছে পাঠানো হতো। সবশেষ তারা ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে ডিবির অভিযানের কারণে তারা পেরে উঠতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, গ্রুপটা শুধু অপহরণ করে না, তারা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তারা গরু, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
ব্যক্তিগত গাড়িতে চালক নিয়োগ দেয়ার আগে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা দেখেছি অনেক চালক অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। বড়লোকের সন্তান অপহরণ করতে হলে চক্রটি গাড়ি চালকদের ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে। হিমেলের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে।