বাণিজ্য ডেস্ক :
বেনাপোল বন্দরে আমদানি করা ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য পণ্য রাখার নির্দিষ্ট শেড বা ইয়ার্ড না থাকায় প্রায়ই ঘটছে অগ্নিকাণ্ড। বন্দর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অভাবে আগুন আতঙ্কের মধ্যেই ব্যবসা পরিচালনা করছেন আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাও বলছেন, অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে নানা পরামর্শ দেয়া হলেও তারা আমলে নিচ্ছে না।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার ৩০ শতাংশই কেমিক্যালজাতীয় পণ্য। এসব কেমিক্যালের মধ্যে বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থ রয়েছে ৫ শতাংশ। যত্রতত্র মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল বছরের পর বছর পড়ে থাকছে বন্দরে। কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা অসাবধানতা ছাড়াই আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এসব পণ্য নিজে থেকেই তেজস্ক্রিয় হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এদিকে ১৯৯৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বড় ধরনের ১১টি আগুনের ঘটনা ঘটলেও সমাধানে পদক্ষেপ নিচ্ছে না বন্দর কর্তৃপক্ষ। ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, তাদের সবসময় অগ্নিকাণ্ডের আতঙ্কে কাজ করতে হয়। কেমিক্যাল দ্রব্যগুলোর জন্য আলাদা একটি শেড করলে তাদের জন্য বেশ সুবিধা হয়।
তবে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান বলেন, ‘এসব দাহ্য পদার্থ রাখা বা লোড-আনলোড করতে নির্দিষ্ট জায়গা করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছে।’
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব অগ্নিকাণ্ডের বেশির ভাগ ঘটনা দাহ্য ও ব্লিচিং পাউডার থেকেই সূত্রপাত। বেনাপোল ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ইন্সপেক্টর রতন কুমার দেবনাথের দাবি, বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রতিরোধমূলক নানা পরামর্শ দিলেও তারা আমলে নিচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘তাদের যদি সদিচ্ছা না থাকে, আমি যতই পরিদর্শন করি আর আমি যতই কথা বলি, তারপরও যদি তারা না মানে, তাহলে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটবেই।’
তবে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল পণ্য রাখার জন্য নিরাপদ শেড দ্রুত তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে একটি ফায়ার সিস্টেম রয়েছে। এটি আরও আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দরে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও ফায়ার স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে জনবল রয়েছে মাত্র ছয়জন।