হোম অন্যান্য ৩ বছর পার হলেও শেষ হয়নি আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের তদন্ত

৩ বছর পার হলেও শেষ হয়নি আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের তদন্ত

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 43 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
আজ থেকে তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর দুপুরে ঢাকার সিএমএম আদালতে পুলিশের ওপর পিপার স্প্রে করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। প্রকাশক দীপন হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে এদিনে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। এ সময় অপর আসামি আরাফাত ও সবুরকেও ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে জঙ্গিরা। পরে ঘটনাস্থল থেকে আরাফাত ও সবুরকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় সে সময়কার কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন আকন্দ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গিদের পাশাপাশি আরও ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ধাপে ধাপে এ মামলায় গ্রেফতার করা হয় ২৪ জনকে। ইতোমধ্যে তারা সবাই নিম্ন ও উচ্চ আদালত থেকে জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন। তবে এখনও শেষ হয়নি মামলার তদন্ত। এরইমধ্যে দফায় দফায় পিছিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ। কয়েক দফা পরিবর্তন করা হয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত ৩০ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে এদিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা সিটিটিসি পুলিশ। নতুন করে আগামী ৩ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, এ মামলায় গ্রেফতারকৃত ২৪ জন হলেন- শাহ আলম, ফাতিমা তাসনীম শিখা, ঈদি আমিন, হুসনা আক্তার হুসনা, খোদেজা আক্তার লিপি, মো. তানভির সোহেল, তানজিলা আফরোজ, নাসির মিয়া, ওমর ফারুক তালুকদার, মোজাম্মেল হোসেন সাইমন, মো. শেখ আব্দুল্লাহ, মো. রিয়াজুল ইসলাম, ওমর ফারুক নোমান, শাহিন আলম, মো. রশিদুন্নবী ভূইয়া, বখতিয়ার রহমান নাজমুল, বিএম মজিবুর রহমান, মেহেদী হাসান অমি, মো. সুমন হোসেন পাটোয়ারী, তানভীর মিয়া, খায়রুল ইসলাম, মো. আরাফাত রহমান, মো. আ. সবুর ও মো. হামিম হোসেন ফাহিম। তারা সবাই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

তদন্তের ধীরগতি সম্পর্কে জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) পুলিশের পরিদর্শক মো. আজিজ আহমেদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এ ধরনের স্পর্শকাতর মামলার তদন্তের ধীরগতি নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “এসব মামলায় একটু সময় লাগবেই। কারণ, এখানে অনেক আইনের রুলস আছে যেটা একটু সময় নিয়ে না করলে অস্পষ্ট থেকে যেতে পারে।”

এত আসামি জামিনে কীভাবে জানতে চাইলে মহানগর পিপি বলেন, “অনেক সময় তদন্তের স্বার্থে অনেককে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ হয়তো তাদের বিরুদ্ধে কিছু পায়নি, এজন্য জামিন হয়ে গেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হতেও পারে। তখন তারা পলাতক হলে আদালত জামিন বাতিল করতে পারেন।”

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আয়মান ওরফে মশিউর রহমান (৩৭), সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক (২৪), তানভীর ওরফে সামশেদ মিয়া ওরফে সাইফুল ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬), রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন (২৬) ও মো. ওমর ফারুক ওরফে নোমান ওরফে আলী ওরফে সাদ (২৮) পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি মোটরসাইকেল যোগে আনসার আল ইসলামের অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়। এছাড়া আদালতের আশপাশে ও মূল ফটকের সামনে অবস্থান করা অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন