হোম জাতীয় হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজারের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন

জাতীয় ডেস্ক :

চট্টগ্রামে হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজার নুরুল ইসলাম নাহিদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি করেছে, নাহিদ রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ট্রান্সফরমারের তার চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ সময় ট্রান্সফরমারের তেল পড়ে তার শরীর ঝলসে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে শওকত নামে এক পুরাতন লোহা বিক্রেতাকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানায় পুলিশ।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেওয়ার পর ওই পরিবহন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। মৃত নুরুল ইসলাম নাহিদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন।

এ ঘটনায় আটক মো. শওকত নগরীর বাকলিয়া থানার মেরিনার্স সড়কের পুরনো তামা-লোহার সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়ের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলায়।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে দুই ব্যক্তি একটি সিএনজি অটোরিকশায় আহত নাহিদকে বাকলিয়া থানার শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন বালুর মাঠ থেকে চান্দগাঁও থানার চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকায় বাসায় নিয়ে যায়। বাসা থেকে নাহিদ ও তার স্ত্রীকে নিয়ে তারা হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। কিন্তু পথে দু’জন নেমে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক নাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং তদন্ত শুরু করে।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘স্ত্রীকে কক্সবাজার যাওয়ার কথা বলে নাহিদ গিয়েছিল রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা এলাকায়। সেখানে তার সঙ্গে ওসমানসহ আরও ২-৩ জন ছিল। ভোর রাত ৪টার দিকে ট্রান্সফরমার থেকে তামার তার খুলতে গিয়ে নাহিদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। ট্রান্সফরমার থেকে জ্বালানি তেল পড়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা শওকতকে ফোন করে। শওকত তাদের কাছ থেকে চোরাই তামা-লোহার সামগ্রী কিনত। শওকতের পরামর্শে ওসমানসহ দুই ব্যক্তি আহত নাহিদকে কর্ণফুলী নদীপথে নৌকায় করে বাকলিয়ায় নিয়ে আসে এবং বাসায় নিয়ে যায়। পরে ঝামেলার কথা ভেবে দুজন মাঝপথে নেমে যায়।’

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ওসমান পেশায় নৌকার মাঝি। তার ফোন নম্বর সংগ্রহ করে দেখা যায়, তিনি শওকতের সঙ্গে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ৫০ বারের বেশি মোবাইলে কথা বলেছেন। মোবাইল কলের সূত্র ধরে শওকতকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। এরপর শওকত জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদের মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য দেয়।

এ বিষয়ে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, রাতে ওসমান ও নাহিদের অবস্থান সরফভাটা এলাকায়। পাশাপাশি ওই এলাকার পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডিজিএম’র সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে সরফভাটা এলাকায় ট্রান্সফরমারের তার কাটার বিষয়েও সত্যতা পেয়েছি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রান্সফরমারের সঙ্গে বৈদ্যুতিক তারগুলোর সচল রাখার জন্য এক ধরনের তেল জাতীয় দ্রব্য থাকে। তার কাটার পর তেল জাতীয় ওই দ্রব্য নাহিদের হাতে ও শরীরে পরে ঝলসে যায়।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন